ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে দেশব্যাপী অনুষ্ঠিত বিক্ষোভের আড়ালে সিলেট, বগুড়া, গাজীপুরসহ কয়েকটি শহরে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় ৪৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (০৮ এপ্রিল) সকালে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে।
সোমবার (০৭ এপ্রিলা) গাজায় ইসরায়েলের সামরিক হামলার বিরুদ্ধে বাংলাদেশজুড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়। তবে এ সময় সিলেট, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, খুলনা, গাজীপুর ও বগুড়ায় বাটা শো-রুমসহ একাধিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এতে জনমনে চরম উদ্বেগ দেখা দেয়।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে রাতেই জানানো হয়, এসব সহিংসতার ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে দ্রুত গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “পুলিশের কাছে হামলাকারীদের ভিডিও ফুটেজ রয়েছে। তাদের শনাক্ত করে দ্রুত গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “সরকার কোনো ন্যায়সঙ্গত ও শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে বাধা দেয় না, তবে প্রতিবাদের নামে কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বরদাশত করা হবে না।”

খুলনা নগরীতে বাটার শো-রুম ও একটি রেস্তোরাঁয় ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় ৩১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সোনাডাঙ্গা থানার ওসি শফিকুল ইসলাম বলেন, “গতরাতে শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।”
পুলিশের মিডিয়া কর্মকর্তা মো. আহসান হাবিব জানিয়েছেন, ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা ফুটেজ বিশ্লেষণ করে বাকি জড়িতদেরও শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের কাজ চলছে।
গাজীপুর মহানগরের গাছা থানার আওতাধীন বোর্ডবাজার এলাকায় তৃপ্তি হোটেল, রাঁধুনি হোটেল ও বাটা ডিলার শো-রুমে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের দেওয়া বিবৃতি অনুযায়ী, দুষ্কৃতিকারীরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে এই হামলা চালিয়ে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা করেছে।
ঘটনার পরপরই সেনাবাহিনীর সহায়তায় পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে অভিযুক্তদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করে।
ঘটনার প্রেক্ষিতে সোমবার রাতে একটি আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয় বাটা। বিবৃতিতে বলা হয়, “বাটা একটি ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান, যার যাত্রা শুরু হয়েছে চেক প্রজাতন্ত্র থেকে। এটি কোনো রাজনৈতিক সংঘর্ষ বা ইসরায়েল-প্যালেস্টাইন সংকটে সম্পৃক্ত নয়।”
বাটার বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “দুঃখজনকভাবে, কিছু ভ্রান্ত ধারণার কারণে আমাদের কয়েকটি আউটলেট ভাঙচুরের শিকার হয়েছে। আমরা সহিংসতার তীব্র নিন্দা জানাই এবং বাংলাদেশের মানুষের প্রতি আস্থা ও শ্রদ্ধা রেখে নিরলসভাবে সেবা দিয়ে যেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”