ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দেওয়ার চেষ্টার সময় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কেবিন ক্রু জেরিন তাসনিম অনিমাকে আটক করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সন্ধ্যায় ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন চেকপয়েন্ট থেকে তাকে আটক করা হয়।
জানা গেছে, অনিমা এমিরেটস এয়ারলাইন্সের (ইকে ৫৮৭) ফ্লাইটে আমেরিকা যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু তার কাগজপত্র যাচাই করে ভুয়া ও অননুমোদিত প্রমাণ পাওয়ায় তাকে থামিয়ে দেওয়া হয়।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মুখপাত্র এবিএম রওশন কবীর জানান, বিদেশে যেতে হলে কর্মীদের বৈধ এনওসি (নো অবজেকশন সার্টিফিকেট) লাগে। কিন্তু অনিমার এনওসি ছিল জাল এবং তার স্টাডি লিভের আবেদন গ্রহণই করা হয়নি।
তিনি বলেন, “ভুয়া কাগজপত্র ব্যবহার করে বিদেশ যাওয়ার চেষ্টা শুধু চাকরিবিধির লঙ্ঘন নয়, এটি গুরুতর অপরাধও। বিষয়টি তদন্তাধীন।”
সূত্র বলছে, অনিমার বাবা আশরাফ আলী সরদার নিজেও বিমানের একজন ফ্লাইট পার্সার। দীর্ঘদিন ধরে তিনি মেয়ের পক্ষে নানা অনৈতিক সুবিধা আদায় করে আসছিলেন। এমনকি চলতি হজ মৌসুমে অতিরিক্ত চাপ থাকা সত্ত্বেও, অনিমা ভুয়া মেডিক্যাল সনদ দেখিয়ে ছুটি নেন।
তিনি গত ১ মার্চ থেকে একাধিকবার ছুটি বাড়িয়ে শেষ পর্যন্ত ২৯ মে পর্যন্ত ছুটিতে ছিলেন। বিমানের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তার এক্স-রে রিপোর্ট এবং প্লাস্টার নিয়েও রয়েছে সন্দেহ। অভিযোগ আছে, অন্য কারও এক্স-রে ব্যবহার করে সনদ বানানো হয়েছে, যার পেছনে বিমানের চিকিৎসক ডা. মাসুদের ভূমিকা থাকতে পারে।
অনিমা স্টাডি লিভ চেয়েছিলেন, অথচ তার চাকরির বয়স মাত্র দুই বছর। অথচ এই ধরনের ছুটি নিতে তিন বছর চাকরির শর্ত পূরণ করতে হয়।
সূত্র জানায়, তার বাবা তদবির করে স্টাডি লিভ মঞ্জুর করানোর চেষ্টা চালান। মূল উদ্দেশ্য ছিল, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পাওয়ার প্রক্রিয়ায় যেন কোনো জটিলতা না থাকে। এপ্রিলেই অনিমা আমেরিকার ভিসা পান, এরপর অনুমতি ছাড়াই ভুয়া কাগজপত্রে তাকে বিমানবন্দরে পৌঁছে দেন বাবা।
এ ঘটনায় জেরিন তাসনিম অনিমা ও তার বাবা আশরাফ আলী সরদারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি।