হিন্দু বাড়ির গোয়ালঘরে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। নেত্রকোণার সদর উপজেলায় হিন্দু ধর্মাবলম্বী ও ইউপি সাবেক এক চেয়ারম্যানের বাড়ির গোয়ালঘরে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে ৯টি গরু, ৬টি ছাগল ও সেচের যন্ত্রপাতি পুড়ে গেছে।
রবিবার (১১ আগস্ট) মধ্যরাতে সদর উপজেলার ঠাকুরাকোনা ইউনিয়নের সোয়ারীকান্দা গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার পর থেকে ওই এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মাষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। ওই বাড়ির মালিকের নাম দীপক কুমার সাহা রায় চৌধুরী। তিনি ঠাকুরাকোনা উইনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান।
দীপক কুমার জানিয়েছেন, রবিবার মধ্যরাতে বাড়িটির নাটমন্দিরের পাশে টিনের বড় একটি গোয়ালঘরে আগুন দেয় কয়েকজন দুর্বৃত্ত। আগুন দেখে বাড়ির লোকজন চিৎকার শুরু করলে দুর্বৃত্তরা দৌরে পালিয়ে যায়।
সংবাদ পেয়ে সেনাসদস্য সহ ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার আগেই গোয়ালঘরে থাকা ৯টি গরু, ৬টি ছাগল, সেচের যন্ত্রপাতি ও খড়ের গাদা সম্পুর্ণ পুড়ে যায়। এতে প্রায় ১৬ লক্ষ টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।
দীপক কুমার আরও জানান, কে বা কারা আগুন দিয়েছে, তা রাতের অন্ধকারে চেনা যায়নি। আমার কোনো শত্রু নেই, এরপরও কারা যেন আগুন দিয়েছে। গোয়ালঘরের ভেতরে থাকা অবলা প্রাণীগুলো পুড়ে মারা গেছে। এলাকার হিন্দু-মুসলমান সকলের সহযোগিতায় আগুন নিভানো হয়েছে। আর্মি ও ফায়ার সার্ভিসের লোকজন রাতে আসছিলো। আমি এ ঘটনার সঠিক বিচার চাই।
এ ঘটনায় স্থানীয় হিন্দু বাসিন্দারা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন বলে জানান দীপক কুমারের ছোট ভাই অরুণ কান্তি সাহা রায় চৌধুরী। তিনি জানান, খুব বিপদের মধ্যে রয়েছি। এলাকার মুসলমান সম্প্রদায়ের বাসিন্দারাও এ ভয়াবহ ঘটনায় মর্মাহত।
সোমবার (১২ আগস্ট) বিকালে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানিয়া তাবাসসুম, জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি সিতাংশু বিকাশ আচার্য, সাধারণ সম্পাদক মানকি সাহা রায়, জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি জ্ঞানেশ রঞ্জন সরকার, সাধারণ সম্পাদক লিটন পণ্ডিত প্রমুখ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
হিন্দু বাড়ির গোয়ালঘরে আগুন দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া তাবাসসুম জানান, যা দেখলাম, তাতে পরিস্থিতিটা কোনো দুষ্কৃতকারীর মাধ্যমে ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
নেত্রকোণা জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো: ফয়েজ আহমেদ জানান, যে বা যারাই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকুক, তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা হবে।