বাজারে সরবরাহ বাড়ায় কমেছে মাছ ও শাক-সবজির দাম। রমজানের আগে তেল ও চালের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে। শুক্রবার (০৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর কারওয়ান বাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এই চিত্র দেখা যায়।
রাজধানীর কারওয়ানবাজারের বিক্রেতারা বলেন, এখন চালের দাম কমার বদলে উল্টো বেড়ে যাচ্ছে। মিল পর্যায়ে তদারকি নেই। এখানে তদারকি না বাড়ালে সামনের রমজানে আরও দাম বাড়বে বলে জানিয়েছেন তারা।

রাজধানীর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহ’র ব্যবধানে আরও বেড়েছে চালের দাম। বাজারে প্রতি কেজি মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৪ টাকা, আটাইশ ৫৮ থেকে ৬০ টাকা, মোটা স্বর্ণা ৫২থেকে ৫৬ টাকা, নাজিরশাইল ৭৬ থেকে ৮৮ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও প্রতি কেজি পোলাও চাল ১১৬ থেকে ১১৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।


তেলের বাজারের অবস্থা আরও করুণ। ক্রেতারা অভিযোগ করে বলেন, ৫ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল কিছুটা পাওয়া গেলেও ১/২ লিটারের বোতলজাত তেল পাওয়ােই যাচ্ছে না পর্যাপ্ত পরিমাণে। বাজারে হাতে গোনা দুয়েকটি দোকানে পাওয়া গেলেও তা নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে।
আর বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের চেয়েও খোলা সয়াবিন তেল আরও বেশি দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে। প্রতি কেজি খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭৫ থেকে ১৮০ টাকায়।
তেলের বাজারের অস্থিরতার কথা স্বীকার করে খুচরা বিক্রেতারা বলেন, বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণে সয়াবিন তেল সরবরাহ করছে না কোম্পানিগুলো। দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা করছেন সিন্ডিকেটগুলো। আবার তেল কিনতে গেলে সঙ্গে অন্য পণ্য কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে আমাদের। এতে তেলে বাজারে কিছুটা সরবরাহ সংকট তৈরি হয়েছে।


বাজারে সবজির দাম কিছুটা নিম্নমুখী লক্ষ্য করা গেছে। বর্তমানে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়। আর প্রতি কেজি মুড়িকাটা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা ও আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়।
স্থিতিশীল রয়েছে কাঁচা মরিচের দাম। খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়, আর পাইকারিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। এছাড়াও বাজারে লালশাকের আঁটি ১০ টাকা, পুঁইশাক ২০ থেকে ২৫ টাকা, লাউশাক ৩০ টাকা, মুলাশাক ১০ টাকা, কলমিশাক ১০ টাকা, মেথি শাক ১০ টাকা ও পালংশাক ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে অস্থির হয়ে ওঠা ইলিশের দাম কিছুটা কমলেও কমেছে অন্যান্য মাছের দাম। বাজারে বর্তমানে এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২২০০ টাকায়। এছাড়া দেড় কেজি ওজনের ইলিশ ২৮০০ টাকা, ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৮০০ থেকে ১৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, আর ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৩০০ থেকে ১৪০০ টাকা ও ৩০০ থেকে ৪০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের জন্য গুনতে হচ্ছে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত।


বাজারে প্রতি কেজিতে ২০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত কমে প্রতি কেজি রুই বিক্রি হচ্ছে ৩৮০ থেকে ৪২০ টাকা, কাতল ৪০০-৪৫০ টাকা, চাষের শিং মাছ ৫৫০ টাকা, চাষের মাগুর ৫০০ টাকা, চাষের কৈ ২৪০-২৮০ টাকা, কোরাল ৭০০-৮০০ টাকা, টেংরা ৫৫০-৭০০ টাকা, চাষের পাঙাশ ১৮০-২০০ টাকা ও তেলাপিয়া ১৬০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত বাজার মনিটরিংয়ের দাবি ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়েরই। ক্রেতারা বলছেন, নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হয় না। এতে বিক্রেতারা ইচ্ছেমতো দাম বাড়ানোর সুযোগ পান।
আর ব্যাবসায়ীরা বলছেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছেন। বাজারে নিয়মিত অভিযান চালালে অসাধু ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য কমবে।