মিয়ানমারে ভয়াবহ ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সহায়তায় দ্বিতীয় দফায় ত্রাণ ও উদ্ধারকারী দল পাঠিয়েছে বাংলাদেশ। মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বিমানবাহিনীর তিনটি পরিবহন বিমানে উদ্ধার সরঞ্জাম, জরুরি ওষুধ, চিকিৎসক দল এবং ১৫ টন ত্রাণসামগ্রী নিয়ে একটি বিশেষ সহায়তাকারী দল মিয়ানমারের রাজধানী নেপিডোর উদ্দেশে রওনা দেয়।
প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশে ভূমিকম্পের পরপরই বাংলাদেশ সরকার মিয়ানমারে সহায়তা পাঠানোর উদ্যোগ নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় প্রথম দফায় ৩০ মার্চ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বিমানবাহিনীর দুটি পরিবহন বিমানে ১৬.৫ টন জরুরি ত্রাণ সহায়তা পাঠানো হয়।
আজকের দ্বিতীয় দফার পাঠানো ত্রাণ সহায়তার মধ্যে রয়েছে শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি, তাঁবু, স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী, ওষুধসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় অন্যান্য সামগ্রী। এছাড়া উদ্ধার ও চিকিৎসা সহায়তাকারী দলও মিয়ানমারে পৌঁছেছে।
উদ্ধার অভিযানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্নেল মো. শামীম ইফতেখারের নেতৃত্বে ৫৫ সদস্যের একটি বিশেষ দল কাজ করবে। এর মধ্যে ৩৪ সদস্যের উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা হলেন—বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২১ জন, নৌবাহিনীর দুইজন, বিমানবাহিনীর একজন এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ১০ জন।
এছাড়া, ২১ সদস্যের চিকিৎসক দলে রয়েছেন—বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১০ জন, নৌবাহিনীর একজন, বিমানবাহিনীর দুইজন এবং অসামরিক আটজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও নার্স। তারা ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের চিকিৎসা সেবা ও পুনর্বাসনে কাজ করবেন।
মিয়ানমারের এই সংকটময় মুহূর্তে বাংলাদেশ সরকারের মানবিক উদ্যোগকে ইতিবাচক হিসেবে দেখা হচ্ছে। এ সহায়তা দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা ও সুসম্পর্ক আরও দৃঢ় করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে সশস্ত্র বাহিনীর পাশাপাশি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী মনে করে, এই মানবিক সহায়তা ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের দুর্ভোগ কমাবে এবং দুই প্রতিবেশী দেশের জনগণের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার সেতুবন্ধনকে আরও দৃঢ় করবে। ভবিষ্যতে বৈশ্বিক যেকোনো মানবিক সংকটে বাংলাদেশ সরকার ও সশস্ত্র বাহিনী আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় ভূমিকা রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।