রমজান জুড়েই ফলের বাজারে আগুন, শুল্ক কমিয়েও দাম নিয়ন্ত্রণে আসেনি। বরং রমজানের শেষদিকে এসেও ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে রয়ে গেছে বিভিন্ন ফলের দাম। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন রোজাদাররা।
শুক্রবার (২৮ মার্চ) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, কেরানীগঞ্জের জিনজিরাসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, ফলের দামে তেমন কোনো পরিবর্তন আসেনি, বরং কিছু ক্ষেত্রে আরও বেড়েছে।

ইফতারিতে ফল অপরিহার্য হলেও এবার রোজার শুরু থেকেই বাজার ছিল ঊর্ধ্বমুখী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকার আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক ১৫ শতাংশ কমানোর উদ্যোগ নেয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) গত ১৬ মার্চ এক প্রজ্ঞাপনে জানায়, আমদানি পর্যায়ে আরোপিত সম্পূরক শুল্ক ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়েছে এবং ৫ শতাংশ আগাম কর সম্পূর্ণ অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, গত ১০ মার্চ আরেকটি প্রজ্ঞাপনে ফল আমদানিতে বিদ্যমান অগ্রিম আয়করের হার ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়। এতে শুল্ক-কর মোট ১৫ শতাংশ কমানোর সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়।
তবে শুল্ক কমানোর পরও বাজারে এর কোনো ইতিবাচক প্রভাব পড়েনি। ফলের দাম কমার পরিবর্তে বেড়েছে, যা রোজাদারদের জন্য বাড়তি চাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, দাম বাড়ায় অনেকেই ইফতার আয়োজনে ফলের পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছেন। ক্রেতা মহসিন বলেন, ‘শুল্ক কমানোর পরও দেশি-বিদেশি সব ফলের দাম আগের চেয়ে আরও বেশি লাগছে। এতে আমাদের জন্য ইফতারে ফল রাখা কঠিন হয়ে পড়ছে।’


খেজুরের দাম:** দাবাস ৪৩০-৪৫০ টাকা, জিহাদি ২২০-২৪০ টাকা, খুরমা ৩২০-৩৬০ টাকা, আজওয়া ১২০০-১৪০০ টাকা, কালমি ৮০০-৯০০ টাকা, মাশরুক ৬৫০-৭৬০ টাকা, বড়ই ৪৬০-৫০০ টাকা, মরিয়ম ৮০০-১০০০ টাকা ও মেডজুল ১৪০০-১৫০০ টাকা।
বিদেশি ফলের দাম, মাল্টা ৩০০-৩২০ টাকা, কমলা ৩০০-৩৫০ টাকা, সবুজ আপেল ৪৫০ টাকা, রয়েল গালা আপেল ৪২০-৪৫০ টাকা, ফুজি আপেল ৩৮০-৪০০ টাকা, আনার ৫০০-৫৫০ টাকা, লাল আঙুর ৫৮০ টাকা, সবুজ আঙুর ৩৫০ টাকা, নাশপাতি ৩২০ টাকা।


দেশি ফলের দাম, তরমুজ ৪০-৫০ টাকা প্রতি কেজি, পেঁপে ১২০ টাকা, প্রতি পিস বাঙ্গি ৮০-১৩০ টাকা, মানভেদে আনারস ৪০-৫০ টাকা।
শুল্ক কমানো হলেও ফলের দাম কেন বাড়ছে, এ বিষয়ে স্পষ্ট উত্তর দিতে পারেননি বিক্রেতারা। কেউ বলছেন, আমদানি কম হওয়ায় দাম বাড়ছে, আবার কেউ কারণ জানেন না বলে জানিয়েছেন।
রমজানের শেষদিকে এসেও ফলের বাজারের চড়া দামে হতাশ সাধারণ ক্রেতারা। সরকার উদ্যোগ নিলেও বাজারে এর বাস্তবিক প্রতিফলন না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। এখন দেখার বিষয়, পরবর্তী সময়ে বাজারে এর কোনো ইতিবাচক প্রভাব পড়ে কিনা।