সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘বাংলার ইয়াজিদ’ বলে অভিহিত করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্থা শারমিন।
এই মন্তব্যটি তিনি করেছেন রোববার (৬ জুলাই) রাতে নিজের ফেসবুক পেজে প্রকাশিত একটি পোস্টে। সেখানে রাজনৈতিক সহিংসতা, নারীদের ওপর নির্যাতন এবং কারবালার প্রসঙ্গ টেনে এনে তিনি বর্তমান শাসনব্যবস্থাকে তীব্র ভাষায় সমালোচনা করেন।
সামান্থা লিখেছেন, “বাংলার ইয়াজিদ শেখ হাসিনার গুম, খুন ও ক্রসফায়ারে কত নারীর জীবনে নেমে এসেছে অকাল বৈধব্য! এসব ঘটনা একত্র করলে মহাভারতের ‘স্ত্রীপর্ব’, কেও তা হার মানাবে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।”
এই বক্তব্যে তিনি সরাসরি শেখ হাসিনাকে তুলনা করেছেন ইসলামের ইতিহাসের বিতর্কিত চরিত্র ইয়াজিদের সঙ্গে, যাকে কারবালার হত্যাযজ্ঞের জন্য ইতিহাসে দায়ী করা হয়। এমন তুলনা সামাজিক মাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে।
পোস্টে সামান্থা আরও উল্লেখ করেন, “ইমাম হোসেন (রা.) ও তাঁর সাথিদের আত্মত্যাগ ইতিহাসে সত্য ও ন্যায়ের প্রতীক। আজও পৃথিবীর নানা প্রান্তে সাম্রাজ্যবাদ ও স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে যে লড়াই চলছে, সেখানে কারবালার আদর্শ মানুষকে প্রেরণা দেয়।”
নারীদের ভূমিকা এবং আত্মত্যাগের কথা টেনে সামান্থা বলেন, “উম্মে লাইলা, বারাব বিনতে ইমরুল কায়েস এবং হযরত জয়নাব (আ.)—এই নারীদের দৃঢ়তা ও মর্যাদা নারীর স্বাধীনতা ও মর্যাদার প্রতীক হয়ে থাকবে। স্বামী, সন্তান কিংবা পিতা হারানোর পরও তারা মাথা নত করেননি।”
ফেসবুক পোস্টের একটি অংশে তিনি একটি স্মৃতিচারণ করেন, “এক তরুণী একবার প্রশ্ন রেখেছিলেন, ‘আমার কি বিধবা হওয়ার বয়স হয়েছে?’ এই প্রশ্ন আমাদের বিবেককে নাড়া দেয়।”
নারী অধিকারের প্রশ্নে সামান্থা লেখেন, “নারীদের সন্তান হারানোর শোক, স্বজন হারানোর বেদনা, অকাল বৈধব্যের যন্ত্রণা—এসব থেকে মুক্তির পথ খুঁজতে আমাদের নারীর নিরাপত্তা ও অধিকার নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে।”
সামান্থা শারমিনের এই বক্তব্য ইতোমধ্যে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেছে। অনেকে তার বক্তব্যকে ‘সাহসী ও স্পষ্টভাষী’ বলে প্রশংসা করছেন, আবার কেউ কেউ একে ‘অতিরঞ্জিত’ ও ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।
বিশেষ করে কারবালার মতো স্পর্শকাতর ধর্মীয় ইতিহাসের প্রসঙ্গ এনে দেশের একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তুলনার বিষয়টি অনেকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলেও মন্তব্য করেছেন। যদিও সামান্থার পোস্টে তার অবস্থানকে নারী নির্যাতন ও মানবাধিকার প্রসঙ্গে তুলনামূলকভাবে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা দেখা গেছে।