দীর্ঘদিন ধরে চলমান প্রশাসনিক জটিলতার অবসান ঘটিয়ে বগুড়ার শেরপুরের সুঘাট ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন আবু হাসান। এর আগে তিনি ২ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য এবং প্যানেল চেয়ারম্যান-২ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
স্থানীয় সরকার বিভাগের বগুড়ার উপ-পরিচালক মাসুম আলী বেগের অফিস আদেশে গত মঙ্গলবার (৪ মার্চ) প্যানেল চেয়ারম্যান-১ নুরনবী মন্ডল হিটলারের স্থলে আবু হাসানকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
সুগঠিত প্রশাসনিক কাঠামো না থাকায় ইউনিয়নের উন্নয়ন কার্যক্রম ও নাগরিক সেবা প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছিল। নিয়মিত মাসিক মিটিং না হওয়া, রেজুলেশন না থাকা এবং বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় পরিষদে কার্যত অচলাবস্থা তৈরি হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, নির্বাচিত চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান জিন্নাহ মামলাজনিত কারণে পলাতক থাকায় ২০২৩ সালের ৫ আগস্ট প্যানেল চেয়ারম্যান-১ নুরনবী মন্ডল হিটলার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান। কিন্তু দায়িত্ব গ্রহণের পর তার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। ইউপি সদস্যরা গত ১৪ জানুয়ারি কার্যনির্বাহী সভায় তার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনেন এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
এই অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। উপজেলা প্রকৌশলী, সমাজসেবা ও শিক্ষা কর্মকর্তার সমন্বয়ে গঠিত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনে নুরনবী মন্ডলের বিরুদ্ধে অনিয়মের সত্যতা মেলে, যার ফলে তাকে অপসারণ করা হয়। নতুন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দায়িত্ব গ্রহণের ফলে পরিষদের দীর্ঘদিনের প্রশাসনিক অচলাবস্থার অবসান হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা লিটন কুমার দত্ত বলেন, “পরিষদের মাসিক মিটিং ও রেজুলেশন না থাকায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরের উন্নয়ন সহায়তা প্রকল্পের বরাদ্দ অর্থ ফেরত যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছিল। এছাড়া, টিআর, কাবিখা, কাবিটা প্রকল্প, প্রতিবন্ধী ও গর্ভবতী ভাতার কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি। নতুন নেতৃত্ব আসায় এসব জটিলতা কেটে যাবে এবং নাগরিক সেবা স্বাভাবিক হবে।”
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশিক খান বলেন, “সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ইউপি সদস্যরা অনিয়মের অভিযোগ তুলেছিলেন। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে অপসারণ করা হয়েছে এবং নতুন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এতে পরিষদের কার্যক্রম পুনরায় সচল হবে এবং নাগরিক সেবা স্বাভাবিক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।”