বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় প্রেমঘটিত সন্দেহকে কেন্দ্র করে এক হৃদয়বিদারক হত্যাকাণ্ডে রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। নিহত কাবিল উদ্দিন (৩৪) ছিলেন পেশায় একজন ইলেকট্রিক মিস্ত্রি এবং গোসাইবাড়ী বটতলা বাজারে তার একটি খুচরা ইলেকট্রনিক্স দোকান ছিল।
ঘটনার সূত্রপাত প্রতিবেশী পরিবারের একজন নারী সদস্যের সঙ্গে কাবিল উদ্দিনের মোবাইল ফোনে কথোপকথনকে কেন্দ্র করে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কাবিল উদ্দিন প্রতিবেশী মো. সাইফুল ইসলামের পুত্রবধূ মোছা. সুমাইয়ার সঙ্গে নিয়মিত মোবাইলে কথা বলতেন। বিষয়টি সাইফুলের পরিবার ভালোভাবে নেয়নি এবং এতে পারিবারিক সম্পর্কের অবনতি ঘটে।
এরই জের ধরে, গত ৭ এপ্রিল ভোররাতে কৌশলে কাবিল উদ্দিনকে ডেকে নেওয়া হয় সুমাইয়ার পিতার বাড়িতে শেরপুর উপজেলার হাটগাড়ি তালপট্টি গ্রামে। সেখানেই শুরু হয় পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
পুলিশ জানায়, কাবিল উদ্দিনকে প্রথমে বাঁশের লাঠি, কাঠের বাটাম, লোহার রড ও প্লাস্টিকের পাইপ দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। এরপর মুখ গামছা দিয়ে বেঁধে হাত-পা রশি দিয়ে বেঁধে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ৫০০ গজ দূরের একটি ইউক্যালিপটাস বাগানে। সেখানেও তাকে উপর্যুপরি মারধর করা হয়।
পরবর্তীতে তার নিথর দেহ একটি অটোরিকশাযোগে শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ফেলে রেখে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাজিদ হাসান সিদ্দিকী বলেন, “রাত তিনটার দিকে কয়েকজন যুবক একটি ভ্যানে করে একজন আহত ব্যক্তিকে জরুরি বিভাগে নিয়ে আসে। আমাদের চিকিৎসা শুরুর আগেই তারা দ্রæত হাসপাতাল ত্যাগ করে। পরবর্তীতে পরীক্ষা করে দেখা যায়, ব্যক্তি তখনই মৃত ছিলেন।”
৮ এপ্রিল রাতে নিহতের বাবা মো. শাহজাহান আলী (৭৪) শেরপুর থানায় ১৩ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন (মামলা নং-০৯)।
শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: শফিকুল ইসলাম জানান, “ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের ধরতে আমরা অভিযান চালাই এবং এজাহারভুক্ত আসামি গোসাইবাড়ী কলোনীর মো. সহিদুল ইসলাম প্রামানিকের ছেলে মো. গোলাম আজম (২৮) কে গ্রেপ্তার করি।”
তিনি আরও বলেন, “এটি একটি পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। অন্যান্য আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।”