বগুড়ার শেরপুর শহরে দীর্ঘদিন ধরে ফ্লাইওভার নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছে স্থানীয় বাসিন্দারা। এবার সেই দাবিকে আরও জোরালো করতে এক কিলোমিটার দীর্ঘ মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২ টার দিকে পৌর শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের পাশে এই মানববন্ধন ও সমাবেশ আয়োজন করে শেরপুর উপজেলা বিএনপি।
মানববন্ধন শেষে অন্তত ২০ হাজার মানুষের গণস্বাক্ষরসহ একটি স্মারকলিপি উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বরাবর পাঠানো হয়। শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশিক খান এই স্মারকলিপির কপি গ্রহণ করেন।
শেরপুর শহর বগুড়া জেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক কেন্দ্র, যেখানে প্রায় তিন লাখ মানুষের বসবাস। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এই শহর দিয়ে যাতায়াত করেন। শহরের পূর্ব অংশে হাটবাজার, ব্যাংক, পৌরসভা ও থানা থাকলেও পশ্চিম অংশে রয়েছে উপজেলা পরিষদ, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ফায়ার সার্ভিস। মহাসড়কের বিভাজকের কারণে শহরের দুই অংশের মধ্যে যাতায়াতে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, সম্প্রতি ঢাকা-বগুড়া মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করা হলেও শেরপুর শহরের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইওভার নির্মাণের পরিকল্পনা বাতিল করা হয়েছে, যা শহরের পূর্ব ও পশ্চিম অংশের মধ্যে কার্যত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। বর্তমানে উত্তরের গাড়িদহ বাজার এবং দক্ষিণের মির্জাপুর এলাকায় দুটি আন্ডারপাস থাকলেও, এই দুটি আন্ডারপাসের মধ্যে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরত্ব থাকায় তা কার্যকর সমাধান নয়।
ফ্লাইওভার না থাকায় প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ করেন আন্দোলনকারীরা। গত ৮ মাসে শহরের বিভিন্ন অংশে অন্তত ৫০টি দুর্ঘটনা ঘটেছে, যার ফলে ৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। বক্তারা দ্রুত একটি ফ্লাইওভার নির্মাণের দাবি জানান, যা শহরের দুই অংশের সংযোগ স্থাপনে সহায়ক হবে এবং দুর্ঘটনার হার কমাবে।
এই কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মো. সিরাজ (জিএম সিরাজ)। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কেএম মাহবুবর রহমান, শফিকুল আলম তোতা, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, সালফা টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড বিএম কলেজের অধ্যক্ষ ইউসুফ আলী, উলিপুর মহিলা মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবদুল হাই,
উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ সভাপতি পিয়ার হোসেন পিয়ার, সহ সভাপতি মাহবুবুর আলী, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম মিন্টু, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হিরু, জেলা জেলা বিএনপির কার্যনির্বাহী সদস্য আসিফ সিরাজ রব্বানী, উপজেলা সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মোমিন, পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মামুনুর রশিদ আপেল, উপজেলা যুবদলের আহবায়ক আশরাফুদ্দৌলা মামুন, শহর যুবদলের আহবায়ক সাহাবুল করিম,
উপজেলা স্বেচ্ছসেবক দলের আহবায়ক শাহ মো. কাওছার আলী কলিন্স, মহিলাদল সভানেত্রী নাসরিন আক্তার পুটি, সাংগঠনিক সম্পাদক, সুইটি আকতার মিষ্টি, ইসলামী আন্দোলন শেরপুর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মীর মাহমুদুর রহমান চুন্নু, শেরপুর উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সাবেক সভাপতি এসএম ফেরদৌস, শেরশাহ নিউ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আলহাজ¦ আবুল কালাম আজাদ, অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল হাই, মাওলানা হাফিজুর রহমান প্রমূখ।
এছাড়া বাসস্ট্যান্ড ব্যবসায়ী সমিতি, দলিল লেখক কল্যাণ সমিতি, শিক্ষক সমিতি ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সদস্যরা একাত্মতা প্রকাশ করেন।
স্মারকলিপি গ্রহণকালে শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশিক খান বলেন, “জনগণের দাবি আমরা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছি এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে।”