দীর্ঘদিন ধরে পালিয়ে থাকা দেশের কুখ্যাত শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী মোল্লা মাসুদকে অবশেষে গ্রেফতার করেছে সেনাবাহিনী। মঙ্গলবার (২৭ মে) বিকেলে কুষ্টিয়া শহরের কালীশংকরপুর এলাকায় তিন ঘণ্টাব্যাপী রুদ্ধশ্বাস এক অভিযানের মাধ্যমে দুজনকে আটক করা হয়।
সেনাবাহিনীর একাধিক ইউনিট এই অভিযানে অংশ নেয় বলে জানা গেছে। নিরাপত্তা চৌকসভাবে নিশ্চিত করে পুরো এলাকা ঘিরে ফেলে সেনাসদস্যরা। বিকেল ৫টায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করার কথা রয়েছে।
২০০১ সালের ২৫ ডিসেম্বর তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার যেসব শীর্ষ সন্ত্রাসীর নাম প্রকাশ করেছিল, তাদের অন্যতম ছিলেন সুব্রত বাইন। আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোল তার বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করেছিল। এমনকি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তার সন্ধানদাতার জন্য পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়েছিল।
তার সঙ্গী মোল্লা মাসুদও ওই সময়কার কুখ্যাত তালিকায় ছিলেন। উভয়েই দেশের নানা এলাকায় চাঁদাবাজি, খুন ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছিলেন।
১৯৯৭ সালের দিকে ঢাকার অপরাধ জগত কাঁপিয়ে দিয়েছিল একটি চিহ্নিত সন্ত্রাসী গ্রুপ—সেভেন স্টার। এই গ্রুপের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন সুব্রত বাইন। তার সঙ্গে ছিলেন তানভিরুল ইসলাম জয়, টোকাই সাগর, টিক্কা, সেলিম, চঞ্চল ও মোল্লা মাসুদ। সেখান থেকেই সুব্রত বাইন ও মোল্লা মাসুদের সখ্যতা গড়ে ওঠে, যা অপরাধ জগতে তাদের ‘ডেঞ্জারাস জুটি’ হিসেবেই পরিচিত করে তোলে।
দীর্ঘদিন বিদেশে পালিয়ে থাকলেও সম্প্রতি দেশের ভেতরে গোপনে ঢুকে পড়েন এই দুই সন্ত্রাসী। তাদের গতিবিধির ওপর নজর রেখে পরিকল্পিতভাবে এই অভিযান চালায় সেনাবাহিনী।
সেনাবাহিনীর একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, এই গ্রেফতার শুধু দুই সন্ত্রাসীর অবসান নয়, বরং দেশে চলমান সন্ত্রাস দমনে বড় সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হবে।