সকাল থেকে সূর্য ডোবা পর্যন্ত ঘাম ঝরালাম, দিনশেষে শুনি কাজ ভালো হয়নি, তাই টাকা নেই! কান্নাভেজা গলায় কথাগুলো বলছিলেন শেরপুর উপজেলার দিনমজুর আব্দুল হান্নান। তার মতো আরও চার শ্রমিক সোমবার রাতে হাজির হন থানায়। অভিযোগ, ধান কাটার পর ঠিকাদার মজুরি না দিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের সরকারপাড়া গ্রামে। স্থানীয় রাজেক আলীর ছেলে আব্দুল কুদ্দুসের জমিতে ধান কেটে পরিশ্রমের বিনিময়ে টাকা না পেয়ে পাঁচজন দিনমজুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগকারী শ্রমিকরা হলেন, কুসুম্বী ইউনিয়নের বাগড়া গ্রামের মৃত মোজাম্মেল হকের ছেলে আব্দুল হান্নান, মির্জাপুরের কৃষ্ণপুর নামাপাড়া গ্রামের মৃত মনসুর মÐলের ছেলে হাফিজুর রহমান, সাহেব আলী প্রামাণিকের ছেলে আশরাফ আলী, মো. বেলাল হোসেনের ছেলে রিপন এবং আবির হোসেন আকন্দের ছেলে হুমায়ুন কবির।
তারা জানান, গতকাল সোমবার তারা প্রত্যেকে জনপ্রতি ৭০০ টাকা মজুরিতে দেড় বিঘা জমির ধান কাটার কাজে নিয়োজিত হন। দিনভর হাড়ভাঙা খাটুনি শেষে মালিকপক্ষ কোনো মজুরি না দিয়ে উল্টো তর্কে জড়িয়ে পড়েন এবং অপমান করে বাড়ি থেকে বের করে দেন।
একদিনের রোজগার না হওয়ায় তারা দিশেহারা হয়ে থানায় এসে আশ্রয় নেন। শ্রমিক হাফিজুর রহমান বলেন, জীবন চলে এ শ্রম দিয়ে, আর এই শ্রমের দামই যদি না পাই, তাহলে পরিবার নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে”
আব্দুল হান্নান বলেন, “ যে মালিক আমাদের নিয়ে যায়, সে নিজেই চুক্তি করে কাজ করায়। কাজ শেষে বলে ধান ভালো কাটেনি, তাই মজুরি দিব না। গালাগাল করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়।”
তবে অভিযুক্ত জমির মালিক আব্দুল কুদ্দুসের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি লোকমুখে শুনেছি, এ ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। বিষয়টি মানবিক বিবেচনায় সুষ্ঠু সমাধানের চেষ্টা করব।
শেরপুর থানার এএসআই উত্তম বলেন, অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। স্থানীয়দের উপস্থিতিতে শ্রমিকদের মজুরী তিন হাজার পাঁচশো টাকা পরিশোধ করা হয়েছে