পটুয়াখালীর বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন কেবল সূর্যমুখী ফুলের ঝলমলে সৌন্দর্য। বছরের ব্যবধানে দ্বিগুণ হয়েছে এই তেল ফসলের আবাদি জমির পরিমাণ। কৃষকেরা বলছেন, তুলনামূলক কম পরিশ্রম ও খরচে বেশি লাভের সুযোগ থাকায় সূর্যমুখী চাষে আগ্রহ বাড়ছে। এবার বাম্পার ফলন হওয়ায় সূর্যমুখী বিক্রির অপেক্ষায় উচ্ছ্বসিত চাষিরা।
কৃষি বিভাগ জানায়, গত বছর ১,৪৫০ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী আবাদ হয়েছিল, যা এবার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২,৩৩৫ হেক্টরে। এই ব্যাপক চাষ থেকে প্রায় ৪,৫০০ মেট্রিক টন বীজ উৎপাদন হবে, যার বাজারমূল্য ৩৫ কোটি টাকা।
সূর্যমুখী চাষের অল্প খরচে বেশি লাভের সম্ভাবনা দেখে কৃষকদের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। প্রতি একর জমিতে ১০-১৫ হাজার টাকা খরচ হলেও ৩০-৩৫ হাজার টাকায় বিক্রির আশা করছেন চাষিরা।
স্থানীয় কৃষক সোবাহান মুন্সি বলেন, “প্রতি একর জমিতে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা খরচ হলেও ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা বিক্রি করতে পারবো বলে আশা করছি। লাভজনক হওয়ায় আগামীতে আরও বড় পরিসরে সূর্যমুখী চাষ করবো।”
চাষি শিমুল মুধা বলেন,”সূর্যমুখী চাষে খরচ কম, লাভ বেশি। এবার নিজের পরিবারের তেলের চাহিদা মিটিয়ে বাকিটা বাজারে বিক্রি করতে পারবো।”
পটুয়াখালী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম জানান, “পরিবারের তেলের যোগান মিটিয়ে কৃষকেরা অতিরিক্ত সূর্যমুখী বীজ বাজারে বিক্রি করতে পারছেন। এটি স্বাস্থ্যসম্মত হওয়ায় এর চাহিদাও বাড়ছে। আমরা কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি।”
সূর্যমুখীর নানা উপকারিতা: তেল উৎপাদনের পাশাপাশি গাছ থেকে গো-খাদ্য তৈরি করা যায়। অন্য ফসলের তুলনায় রোগবালাই কম হওয়ায় উৎপাদন খরচও কম। সয়াবিন তেলের বিকল্প হিসেবে এটি স্বাস্থ্যকর ও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
পটুয়াখালীর কৃষি বিভাগ আশা করছে, আগামী বছরগুলোতে আরও বেশি জমিতে সূর্যমুখীর চাষ হবে এবং এই ফসল কৃষকদের জন্য সোনালী সম্ভাবনা বয়ে আনবে।