জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, “আমাদের অবস্থান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নয়, বরং তাদের প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা ও সমর্থন রয়েছে। আমরা আশা করি, তারা সেই আস্থার প্রতিদান দেবেন।”
শনিবার (২২ মার্চ) শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগের বিচার, নিবন্ধন বাতিল এবং রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে এই সমাবেশ আয়োজন করা হয়।
‘গণহত্যার বিচার করেই আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করতে হবে’ জানিয়ে হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, “পৃথিবীর কোথাও এমন নজির নেই যে, গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে যারা ক্ষমতা হারিয়েছে, তাদের আবার নির্বাচনের সুযোগ করে দেওয়া হয়। আমরা কোনো নির্বাহী আদেশে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ চাই না। তারা যত গণহত্যা করেছে, গুম করেছে, যত অপরাধ করেছে, তার বিচার করেই তাদের নিষিদ্ধ করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলার মাটিতে কোনো আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করা হবে না। ভারতীয় আধিপত্যবাদকেও আর দেশে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। আমরা কোনো রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নই, বরং আওয়ামী লীগ যে প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করেছে, সেগুলো পুনর্গঠনের পক্ষে।”
সমাবেশে এনসিপির নেতারা আওয়ামী লীগকে রাজনীতি থেকে নিষিদ্ধ করা এবং তাদের নেতাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার দাবি জানান।
দলের যুগ্ম সদস্য সচিব আকরাম হোসেন বলেন, “শেখ হাসিনা যেভাবে পালিয়ে গেছেন, বিশ্বের কোনো দেশের প্রধানমন্ত্রী এভাবে পালায়নি। সেনাবাহিনীর একটি অংশ আওয়ামী লীগকে সেফ এক্সিট দিয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “সচিবালয়ের বড় বড় কর্মকর্তারা এখনো আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের গোপনে আশ্রয় দিচ্ছেন। যদি খোঁজা হয়, অনেকের বাসায় তাদের পাওয়া যাবে। আওয়ামী লীগের নেতাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের মধ্যে বণ্টন করতে হবে।”
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “যে দল আগামী দিনে আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে আনতে চাইবে, ছাত্র-জনতা তাদের প্রতিহত করবে।”
এই বিক্ষোভ সমাবেশে এনসিপির কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তারা গণহত্যার বিচার ও রাজনৈতিক সংস্কারের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
এনসিপি নেতাদের মতে, দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে অপরাধীদের বিচার, রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর পুনর্গঠন এবং রাষ্ট্রের প্রতি জনগণের আস্থার পুনঃস্থাপনই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।