একসঙ্গে পথচলার অঙ্গীকার করেছিলেন আবুল আয়েব মুকিদ মুকুল ও আইরিন পারভিন নন্দা। জীবনের শেষ গন্তব্যেও তারা গেলেন একসঙ্গে। স্বামীর মৃত্যুর খবর শুনে অসুস্থ হয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন স্ত্রীও।
রোববার (২০ জুলাই) রাত আড়াইটার দিকে মেহেরপুর শহরের পেয়াদাপাড়ার নিজ বাসায় এই হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে।
মঙ্গলবার বিষয়টি নিশ্চিত করে গণমাধ্যমে মেহেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাউল হক বলেন, এটি স্বাভাবিক মৃত্যু বলে ধারণা করা হচ্ছে। পারিবারিক সিদ্ধান্তে দুজনকেই দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিনের মতো রাতের খাবার শেষে ঘুমাতে যান মুকুল ও নন্দা। হঠাৎ গভীর রাতে মুকুল অসুস্থ হয়ে পড়েন। স্ত্রীর চিৎকারে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। খবর দেওয়া হয় সন্তানদের। মুকুলের মৃত্যুতে স্ত্রীর অবস্থাও দ্রুত খারাপ হয়। একপর্যায়ে তিনিও নিথর হয়ে পড়েন।
মেয়ে তন্বী জানান, “রাত আড়াইটার দিকে আম্মা ফোন দিয়ে জানালেন বাবা খুব অসুস্থ। আমি শ্বশুরবাড়ি থেকে ছুটে এসে দেখি, মা মেঝেতে পড়ে আছেন, বাবা ঘরের ভেতর নিথর। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা বলেন, দুজনেই আর নেই।”
মুকুলের ভাই অ্যাডভোকেট মোখলেছুর রহমান স্বপন বলেন, “আমার ভাই ও ভাবি ভালো মানুষ ছিলেন। কারো সঙ্গে কোনো শত্রুতা ছিল না। আমরা তাদের জন্য সবার দোয়া চাই।”
এ ঘটনায় মর্মাহত স্থানীয় কবর খননকারীরা বলেন, “স্বামী-স্ত্রীর একসঙ্গে কবর খুঁড়তে হবে—এমনটা কল্পনাও করিনি। আগে কখনো এমন দেখিনি।”
১৯৯০ সালে বিয়ে হয়েছিল মুকুল ও নন্দার। তিন কন্যাসন্তান রয়েছেন তাদের, সবাই বিবাহিত।