নাটোরের গুরুদাসপুরে মামলা থেকে এক প্রবাসীর নাম বাদ দেওয়ার শর্তে ৫ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করার অভিযোগে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু জাফর মৃধাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এই ঘটনায় তাকে নাটোরের পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করার পাশাপাশি একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
নাটোরের গুরুদাসপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু জাফর মৃধাকে ঘুষ চাওয়ার অভিযোগে বরখাস্ত করা হয়েছে। এক প্রবাসীর নাম মামলা থেকে বাদ দেওয়ার শর্তে ৫ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করায় এই সিদ্ধান্ত নেয় পুলিশ বিভাগ।
বুধবার (৪ জুন) সকালে গণমাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আমজাদ হোসাইন।
জানা গেছে, গত ১৫ মে গুরুদাসপুর পৌরসভার চাঁচকৈড় বাজারে ইটভাটা মালিক ফরিদ মোল্লার ছেলে রুবেল মোল্লাকে মারধর করে একদল দুর্বৃত্ত। এ ঘটনার পরদিন দায়ের করা মামলায় আমেরিকাপ্রবাসী রাসেল হোসাইনকে ১ নম্বর আসামি করা হয়। অথচ তিনি ওই সময় দেশে ছিলেন না।
ওই মামলার তদন্তের দায়িত্ব পান এসআই আবু জাফর মৃধা। এরপর থেকেই তিনি যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী রাসেল হোসেনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে তার ম্যানেজারের নিকট ঘুষ দাবি করতে থাকেন বলে অভিযোগ উঠেছে।।
রাসেলের ম্যানেজার গোলাম রাব্বি জানান, এসআই তাকে মোবাইল ফোনে বলেন, রাসেলের নাম মামলার তালিকা থেকে বাদ দিতে হলে ৫ লাখ টাকা লাগবে। ঈদের আগেই এক লাখ টাকা পাঠাতে হবে বলেও চাপ দেন এসআই। এই আলাপ তিনি রেকর্ড করেন এবং নাটোরের পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দেন।
প্রবাসী রাসেল হোসাইন বলেন, “আমি দেশের বাইরে থেকেও দেশের মানুষের জন্য ব্যবসা চালাই। অথচ দেশে না থেকেও আমাকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে। এর চেয়েও ভয়ংকর বিষয় হলো, একজন পুলিশ কর্মকর্তা আমার ম্যানেজারকে ফোন করে সরাসরি টাকা চেয়েছেন। আমি হতবাক, ক্ষুব্ধ ও আতঙ্কিত।”
তিনি আরও বলেন, “আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চাই এবং এসআই আবু জাফরের মতো দুর্নীতিগ্রস্তদের যেন পুলিশে জায়গা না হয়।”
ঘুষ চাওয়ার কথোপকথনের একটি অডিও গতকাল সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি গণমাধ্যমেও আসে।
অভিযোগ অস্বীকার করে এসআই আবু জাফর মৃধা দাবি করেন, “টাকা চাওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। এই অভিযোগ ভিত্তিহীন।”
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার আমজাদ হোসাইন বলেন, “অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। এজন্য এসআইকে বরখাস্ত করে পুলিশ লাইন্সে যুক্ত করা হয়েছে।”
এছাড়াও ঘটনার তদন্তে সিংড়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সনজয় কুমার সরকারকে প্রধান করে একটি তিন সদস্যের কমিটিও গঠন করা হয়েছে। তদন্ত শেষে এসআই আবু জাফরের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।