নাটোরের বড়াইগ্রামে এইচএসসি পরীক্ষার হলে ছাত্রদল নেতার প্রবেশকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা। পরীক্ষা চলাকালীন কেন্দ্রের ভেতরে অনধিকার প্রবেশ করায় একজন রাজনৈতিক নেতার ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এ নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়ায়। এ ঘটনায় কেন্দ্র সচিবকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দিয়েছে প্রশাসন।
সারাদেশে বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) থেকে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়েছে। পরীক্ষার নিয়ম অনুযায়ী, কেন্দ্র শুরুর ৪৮ ঘণ্টা আগে থেকে একশ গজের মধ্যে সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ। এমনকি কেউ প্রবেশ করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা আছে।
তবে এসব নিয়ম অমান্য করে নাটোরের বড়াইগ্রামের বনপাড়া শহরের একটি কেন্দ্রে পরীক্ষার শুরু হওয়ার প্রায় আধা ঘণ্টা আগে ঢুকে পড়েন বনপাড়া পৌর ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রাকিব সরদার। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ছবিতে দেখা যায়, তিনি পরীক্ষাকক্ষে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলছেন। বিষয়টি সামনে আসার পর অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন—পরীক্ষার মতো সংবেদনশীল পরিবেশে কীভাবে একজন রাজনৈতিক নেতা প্রবেশ করলেন?
বড়াইগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লায়লা জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ‘বনপাড়া কলেজ কেন্দ্রে সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে আমি পৌঁছাই। তখন কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, কক্ষ পরিদর্শক ও পরীক্ষার্থী ছাড়া আর কাউকে দেখা যায়নি। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, একজন পরীক্ষার্থীকে আসন দেখিয়ে দিতে রাকিব সরদার সেখানে ঢুকেছিলেন।’
তিনি জানান, নিয়ম ভঙ্গের দায়ে বনপাড়া কলেজ কেন্দ্রের সচিব ও উপজেলা পল্লি উন্নয়ন কর্মকর্তা মিজানুর রহমানকে শোকজ করা হয়েছে। একই সঙ্গে ১৪৪ ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগে বড়াইগ্রাম থানার ওসিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম পরোয়ার হোসেন জানান, ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আটক করার প্রক্রিয়া চলমান।
অভিযুক্ত রাকিব সরদার বলেন, ‘ছোট ভাইয়ের প্রবেশপত্র দিতে গিয়ে কিছু সময়ের জন্য কেন্দ্রে ঢুকেছিলাম। পরে বের হয়ে এসেছি। কেউ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ছবি তুলে বিষয়টি ভিন্নভাবে উপস্থাপন করছেন।’
নিয়ম অনুযায়ী, পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশের জন্য প্রয়োজনীয় অনুমতি ও পরিচয়পত্র থাকা বাধ্যতামূলক। প্রশ্ন উঠেছে, একজন রাজনৈতিক নেতার এমন উপস্থিতিতে কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্তরা কীভাবে তা এড়িয়ে গেলেন? এ প্রশ্নের জবাব খুঁজছে স্থানীয় প্রশাসন।