রংপুর শহরে ভুড়ারঘাট এলাকার গৃহবধূ মোছা: লাবনী আক্তার প্রসব বেদনা নিয়ে শনিবার (১৩ জানুয়ারি) নগরীর বাসটার্মিনাল সংলগ্ন হলিক্রিসেন্ট হাসপাতালে ভর্তি হন। সেদিন রাতেই সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তিনি ১টি ছেলে সন্তান জন্ম দেন। কিন্তু ক্লিনিক থেকে ছাড়পত্র নেওয়ার সময় বিল পরিশোধ করতে ব্যর্থ হন লাবনী আক্তার ও তার স্বামী মো: ওয়াসিম আকরাম।
জানা গেছে, ক্লিনিকের পরিচালক এমএস রহমান রনিকে তারা বিলের টাকা পরে পরিশোধের কথা বললেও কাজ হয়নি। উল্টো সদ্য জন্ম নেওয়া নবজাতককে বিক্রি করে ক্লিনিকের বিল পরিশোধের পাশাপাশি সেই দম্পতিকে আরও টাকা দেওয়ার লোভ দেখানো হয়। কিন্তু দম্পতি এতে শুরুতে রাজি ছিলেন না। পরে ক্লিনিক মালিক মো: রনি নবজাতকটির বাবা ওয়াসিমকে নানা রকম প্রলোভন দেখায়। পরবর্তীতে বুধবার (১৭ জানুয়ারি) কৌশলে নিজের পূর্ব পরিচিত দম্পতি জেরিনা আক্তার বিথী একং মো: রুবেল হোসেন রতনের কাছে ৪০ হাজার টাকায় ওই শিশুটিকে বিক্রি করে দেন।
কিন্তু প্রতিবাদী হয়ে ওঠেন নবজাতকের মা লাবনী আক্তার। তিনি এ ঘটনাটি পুলিশকে জানায়। তার অভিযোগের ভিত্তিতে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ অভিযান চালিয়ে রবিবার সকালে রংপুর শহরে পীরজাবাদ এলাকা থেকে ওই শিশুটিকে উদ্ধারসহ এর সাথে জড়িত থাকা ৩ জনকে আটক করে। আটককৃতরা হলো, বাসটার্মিনাল সংলগ্ন হলিক্রিসেন্ট হাসপাতালের পরিচালক মো: রনি ও শিশুটিকে কেনা দম্পতি জেরিনা আক্তার বিথী ও মো: রুবেল হোসেন।
রবিবার (২১ জানুয়ারি) বিকালে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়টি তুলে ধরেন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (অপরাধ) মো: আবু মারুফ হোসেন।
তিনি জানান, নবজাতক বিক্রির বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর হওয়ায় আমরা গুরুত্বসহকারে অভিযান চালিয়ে নবজাতককে উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে তুলে দেই। এ ঘটনায় শিশুটির মা রংপুর কোতয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেছেন। আসামিদের মধ্যে শিশুটির বাবা মো: ওয়াসিমও রয়েছে। কিন্তু তিনি পালিয়েছেন। তাকে আটকের চেষ্টা চলছে এবং অন্য আটককৃতদের আদালতে প্রেরণ করা হবে।