বাগেরহাটের চিতলমারীতে হাত, পা ও মুখ বেঁধে সুন্নতে খতনা করার সময় ৩ বছর বয়সী শিহাব শেখ নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত মো: হামিম শেখ (১৭) নামে এক কিশোরকে আটক করেছে পুলিশ। আর এ ঘটনার সব দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে অভিযুক্ত হামিম শেখ।
বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে হামিম শেখকে আদালতে সোপর্দ করলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো: আছাদুল ইসলাম যশোরের কিশোর সংশোধোনাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
নিহত শিশু শিহাব শেখ চিতলমারী উপজেলার হিজলা গ্রামের মো: ফরহাদ শেখের ছেলে। অভিযুক্ত কিশোর হামিম শেখ (১৭) একই এলাকার মো: রমজান শেখের ছেলে।
জানা গেছে, বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে হামিম শেখের বসতঘরের পাশ থেকে শিশু শিহাবের মরদেহ উদ্ধার করেছে স্থানীয়রা। সেদিন রাতেই পুলিশ অভিযুক্ত হামিম শেখকে গ্রেফতার করে। এ ঘটনায় শিশু শিহাবের মা মোছা: সুমি বেগম বাদী হয়ে ঘাতক হামিমকে আসামি করে চিতলমারী থানায় হত্যা মামলা করেন।
স্থানীয় সূত্রে জান গেছে, ঘাতক হামিম শেখ ওই এলাকায় চোর হিসেবে পরিচিত। বেশ কিছুদিন আগে কারেন্টের তারও চুরি করেছে সে। তার এধরনের কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।
পুলিশ জানিয়েছেন, প্রতিদিনের দিনের মতো বুধবার বিকেলে শিশু শিহাব নিজ বাড়ির উঠানে খেলাধুলা করছিল। এ সময় ঘাতক হামিম শেখ ডেকে নিয়ে নিজ ঘরের মধ্যে হাত, পা ও মুখ বেঁধে শিশু শিহাবের সুন্নতে খতনা করার চেষ্টা করে। এতে শিহাবের মৃত্যু হয়। অনেক খোঁজা-খুঁজির পরে না পেয়ে, রাতে মাইকিংও করে স্থানীয় লোকজন। পরবর্তীতে সেদিন রাতে হামিমের বসতঘরের পাশ থেকে শিশু শিহাবের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
বাগেরহাটের চিতলমারীতে শিশু হত্যার বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চিতলমারী থানার ওসি তদন্ত মো: তরিকুল ইসলাম জানান, হত্যার দায় স্বীকার করে কিশোর হামিম শেখ আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। অনেকদিন ধরে ঘাটত হামিমের মধ্যে সুন্নতে খতনা দেয়ার কৌতূহল ছিল। সে জন্য শিশু শিহাবকে বাছাই করে হামিম।
বাড়িতে কেউ না থাকায়, শিশু শিহাবকে ডেকে ঘরের মধ্যে নিয়ে যায় কিশোর হামিম। শিহাবের হাত, পা ও মুখ বেঁধে ১টি কেঁচি দিয়ে সুন্নতে খতনা দেওয়ার চেষ্টা করে এবং শিশু শিহাবের পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলে। এর একপর্যায়ে শিশু শিহাব অজ্ঞান হয়ে গেলে তাকে ঘরের শৌচাগারের পাশে রেখে দেয় হামিম। সেখানেই শিশু শিহাবের মৃত্যু হয় এবং হামিম বাড়ির বাইরে ঘোরাফেরা করতে থাকে।
তিনি আরও জানান, বৃহস্পতিবার বাগেরহাট ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে শিশু শিহাবের মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। ঘাতক হামিমকে আদালত কিশোর সংশোধোনাগারে পাঠিয়েছেন।