রাণীনগরে গড়ে উঠেছে যৌনখানা, নষ্ট হচ্ছে যুব সমাজ। নওগাঁর রাণীনগরে কিছু প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় এক বাড়িতে যৌনখানা গড়ে তোলার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা সদরের বটতলীর পাশে (পশ্চিম বালুভরা) মাস্টারপাড়ায় জুলেখা-মুজার বাড়িতে এ যৌনখানা গড়ে তোলা হয়েছে। প্রভাবশালী কিছু ব্যক্তিদের ছত্রছায়ায় তারা স্বামী-স্ত্রী দু’জন নিজেরাই এই যৌনখানা পরিচালনা করছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
প্রতিনিয়তই দিন-রাতে তার বাড়িতে অজানা খদ্দেরদের আসা-যাওয়ায় চরম নিরাপত্তাহীনতায় বসবাস করছেন মহল্লাবাসি। সম্প্রতি ওই যৌনখানার নাম এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। এতে করে সুনাম হারাচ্ছে ওই মহল্লার। দ্রুত ওই যৌনখানা বন্ধে এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের সুদৃষ্টি চান এলাকাবাসি
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সদরের বটতলীর পাশে মাস্টারপাড়ার মোজাম্মেল হক মুজা। তার স্ত্রী জুলেখা। এক সময় মুজা সেনেট্যারি ও ফিটিংসের মিস্ত্রির কাজ করতো। আর তার স্ত্রী দজ্জাল চরিত্রের নারী জুলেখা বেপোরোয়া চলাফেরা করতেন। তার বেপোরোয়া চলাফেরা বন্ধ করতে এবং লাগাম টানতে না পারায় মুজা ও তার স্ত্রী জুলেখাকে আলাদা করে দেয় মুজার পরিবার। এরপরেও মুজা কখনোই তার স্ত্রীকে নিজের শাসন আর আয়ত্তের মধ্যে রাখতে পারেনি। প্রায় বছর খানেক আগে থেকে জুলেখা তার নিজ বাড়িতে যৌনকর্মীদের দিয়ে পুরোদমে শুরু করেন অনৈতিক কর্মকান্ড।
সম্প্রতি অবৈধ টাকার লোভে মুজাও তার স্ত্রীকে এই সব অনৈতিক কাজে সহযোগিতা করতে শুরু করেন। বর্তমানে তাদের বাড়িতে প্রতিনিয়তই যৌনকর্মীদের নিয়ে এসে চালিয়ে যাচ্ছেন অনৈতিক কর্মকান্ডের রমরমা ব্যবসা। স্থানীয়রা বলছেন, ওই বাড়িতে যৌনকর্মী নারীর সঙ্গে পুরুষের অনৈতিক কর্মকান্ডে লিপ্ত হওয়ার ছবি-ভিডিও ধারণ করে পুরুষকে ঘরে আটকে রেখে তার বাহিনী দিয়ে ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। জুলেখার এমন কর্মকান্ডের দৌরাত্ম বর্তমানে বেড়েই চলছে। ওই এলাকায় জুলেখার এমন অনৈতিক কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ হলেও সম্মানের ভয়ে প্রতিবাদ করতে পারছে না মহল্লাবাসি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই পরিবারের এক সদস্য বলেন, আমাদের পরিবারের যেটুকু সম্মান ছিল তা নষ্ট করেছে মুজা ও তার স্ত্রী জুলেখা। জুলেখা যৌনকর্মীকে এবং খদ্দেরদের নিয়ে এসে বাড়িতে অনৈতিক কর্মকান্ড চালায়। আর তার পুরো সহযোগীতা করেন তার স্বামী মুজা। বেশ কয়েক মাস ধরে তারা নিজ বাড়িতেই এ কর্মকান্ড চালাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, এদের দু’জনের জন্য আমরা এবং আমাদের পরিবার মহল্লার লোকজনের কাছে মুখ দেখাতে পারছি না। এমনকি তাদের দু’জনের ভয়ে প্রকাশে প্রতিবাদও করতে পাছি না। দ্রুত এসব কর্মকান্ড বন্ধ করতে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন তিনি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাজারের এক ব্যবসায়ী জানান, বাজারে ভালো গরু কিংবা মহিষ জবাই করার আগে কসাইরা যেভাবে বাজারের ঘুরে ঘুরে ডিসপ্লে করে, তেমনিভাবে বিভিন্ন সময় জুলেখা নিজের আত্মীয় পরিচয়ে সুন্দরী সুন্দরী যৌনকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে পুরো রাণীনগর বাজার ঘুরে ঘুরে ডিসপ্লে করান। এরপর তার পোষা বখাটে বাহিনীর সদস্যদের মাধ্যমে দিনে কিংবা রাতে প্রতি ঘন্টা ৫শ’ থেকে শুরু করে ১ হাজার এবং ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়ে খদ্দেরদের তার বাড়িতে নিয়ে এসে অনৈতিক কর্মকান্ড চালায়।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জুলেখার স্বামী মোজাম্মেল হক মুজা বলেন, আমার বাড়িতে এখন খারাপ কোন কাজ হয় না। ইতিপূর্বে ছিল, অনেকেই নিষেধ করার পর তা বন্ধ করে দিয়েছি। এখন যে অভিযোগ আমাদের বিরুদ্ধে তোলা হয়েছে তা সম্পর্ন মিথ্যা।
রাণীনগরে গড়ে উঠেছে যৌনখানা, নষ্ট হচ্ছে সমাজ এ বিষয়ে রাণীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ওবায়েদ বলেন, এই ধরণের কর্মকান্ডের বিষয়ে আমি লোকমুখে শুনেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনার সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।