ভারতের গুজরাট রাজ্যের আহমেদাবাদে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানো যাত্রীদের পরিবারকে এক কোটি রুপি করে ক্ষতিপূরণ দেবে এয়ার ইন্ডিয়ার মালিক টাটা গোষ্ঠী। বৃহস্পতিবার (১২ জুন) দুপুরে এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান এন চন্দ্রশেখরণ।
শুধু নিহতদের পরিবারই নয়, দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসার সম্পূর্ণ ব্যয়ও বহন করবে টাটা গোষ্ঠী। একইসঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত বিজে মেডিকেল কলেজের হোস্টেল ভবনটি পুনর্গঠনের দায়িত্বও নিচ্ছে তারা।
চন্দ্রশেখরণ বলেন, ‘এই ভয়ানক ঘটনার জন্য কোনো ভাষাই যথেষ্ট নয়। যাঁরা প্রিয়জন হারিয়েছেন, কিংবা যাঁরা এখনও আহত অবস্থায় আছেন, তাঁদের প্রতি আমাদের প্রার্থনা ও সহমর্মিতা রইল।’
দিল্লি থেকে লন্ডনগামী বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনারটি বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে আহমেদাবাদের সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করে। কিন্তু আকাশে ওঠার মাত্র পাঁচ মিনিট পরই তা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মেঘানিনগর এলাকার পাশের বিজে মেডিকেল কলেজের ছাত্রাবাসের ওপর বিধ্বস্ত হয়। ঘটনার সময় বিমানে ছিলেন মোট ২৪২ জন—এর মধ্যে ২৩০ জন যাত্রী এবং ১২ জন ক্রু সদস্য।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনায় জানা যায়, আকাশে উড়তে থাকা বিমানটি হঠাৎ করেই বাঁ দিকে হেলে পড়ে এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই মাটিতে ধাক্কা খায়। দুর্ঘটনায় সঙ্গে সঙ্গে আগুন ধরে যায়, বিস্ফোরণ ঘটে ভবনে। এতে বহুতল হোস্টেল ভবনটি প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। এখন পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ এক শোকবার্তায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি লেখেন, ‘আহমেদাবাদের এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় আমি গভীরভাবে শোকাহত। এই বেদনা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকতে আমি রাজ্য সরকার ও প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।’
গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল জানান, দ্রুত উদ্ধার তৎপরতা শুরুর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আহতদের যেন জরুরি চিকিৎসা নিশ্চিত করা হয়, সে বিষয়েও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
ভারতের অসামরিক বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা ডিজিসিএ (DGCA) জানিয়েছে, দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে এরই মধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিমানটির ব্ল্যাক বক্স উদ্ধার করা হয়েছে বলেও নিশ্চিত করা হয়েছে।