কাশ্মীরের পহেলগামে প্রাণঘাতী বন্দুক হামলার পর পাকিস্তান-ভারত সীমান্তে চরম উত্তেজনার মধ্যে নতুন করে সাজানো হলো ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বোর্ড (এনএসএবি)। সাত সদস্যের নতুন বোর্ডের নেতৃত্বে এসেছেন গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইংয়ের (র) সাবেক প্রধান অলোক যোশি।
এই পদক্ষেপকে পরিস্থিতি মূল্যায়নের অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। জাতীয় নিরাপত্তা কাঠামোতে দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত প্রস্তুতি জোরদারে এই পুনর্গঠন গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
বোর্ডে অলোক যোশির সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন সশস্ত্র বাহিনীর তিন শীর্ষ কর্মকর্তা, পূর্বতন ওয়েস্টার্ন এয়ার কমান্ডার এয়ার মার্শাল পিএম সিনহা, দক্ষিণাঞ্চলীয় আর্মি কমান্ডের সাবেক প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল একে সিং এবং সাবেক রিয়ার অ্যাডমিরাল মন্টি খান্না। এছাড়া ভারতীয় পুলিশ সার্ভিসের সাবেক দুই কর্মকর্তা রাজীব রঞ্জন ভার্মা ও মনমোহন সিং এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক কর্মকর্তা বি ভেঙ্কটেশ ভার্মাকেও বোর্ডে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
গত ২২ এপ্রিল পহেলগামে যে বন্দুক হামলা হয়, তাতে ভারতের ভেতরে ব্যাপক নিরাপত্তা উদ্বেগ তৈরি হয়। এর প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২৩ এপ্রিল ডেকেছিলেন কৌশলগত কমিটি সিসিএসের বৈঠক। পাশাপাশি আরও দুটি গুরুত্বপূর্ণ কমিটি রাজনৈতিক বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটি (সিসিপিএ) ও অর্থনৈতিক বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটির (সিসিইএ) বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় ৩০ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে পুনর্গঠন করা হলো এনএসএবি, যা ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলকে বিভিন্ন পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে নীতিগত সুপারিশ দিয়ে থাকে।
জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের (এনএসসি) শীর্ষে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। আর জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে আছেন অজিত দোভাল। এই কাউন্সিলই বোর্ডের সুপারিশ গ্রহণ করে দেশের নিরাপত্তা নীতির দিকনির্দেশনা নির্ধারণ করে।
পহেলগাম হামলার পর ভারত সরাসরি পাকিস্তানকে দোষারোপ না করলেও বেশ কিছু কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে, যেমন ভিসা বাতিল, কূটনীতিক বহিষ্কার, সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত। প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানও ভারতের জন্য আকাশ ও স্থলসীমা বন্ধসহ কড়া বার্তা দিয়েছে।
এ পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) ভারতের মন্ত্রিসভার বৈঠকে পাকিস্তানে হামলার জন্য সেনাবাহিনীকে ‘পূর্ণ স্বাধীনতা’ দেওয়ার কথাও জানানো হয় দেশটির গণমাধ্যমে।