“ক্ষমতার লোভে শেখ মুজিবও ৭২-এর নির্বাচনে ভোট কারচুপি করেছিলেন”এমন বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) দুপুরে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমানের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি। মামলার শুনানিতে বিচারকের একের পর এক প্রশ্নের জবাবে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন তিনি।
আউয়াল বলেন, “আমার বিরুদ্ধে কখনো দুর্নীতি বা অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ কেউ আনতে পারবে না। ডামি নির্বাচন হয়েছে, এটা আমি স্বীকার করি। কিন্তু সেটা হয়েছে রাজনৈতিক সমঝোতার অভাবে, আমার কারণে নয়।”
বিচারক একপর্যায়ে বলেন, “আপনি তো পুরো নির্বাচনী প্রক্রিয়ার প্রধান ছিলেন। অনিয়ম দেখেও পদত্যাগ করলেন না কেন?” জবাবে হাবিবুল আউয়াল বলেন, “৭২ সালে শেখ মুজিবের মতো নেতা যদি কারচুপি করতে পারেন, তাহলে বুঝতে হবে, ক্ষমতার লোভ কতটা শক্তিশালী। আমি সেই পরিস্থিতিতে পদত্যাগ করতে পারতাম না।”
তিনি আরও বলেন, “নির্বাচন কমিশনের কাছে জাতির অনেক প্রত্যাশা ছিল, আমিও সর্বোচ্চ আন্তরিকতা নিয়ে কাজ করেছি। কিন্তু এই কাঠামোতে মৌলিক সংস্কার ছাড়া হাজার বছরেও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না।”
রাষ্ট্রপক্ষ এ সময় প্রশ্ন তোলে, “আপনি সবাইকে দোষারোপ করছেন, কিন্তু আপনি নিজে কী করেছেন?”
জবাবে আউয়াল পাল্টা প্রশ্ন করেন, “আমার জন্য কি এত ছেলেমেয়ে মারা গেছে?”
শুনানিকালে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী আদালতকে জানান, “২০২৪ সালের নির্বাচন নিয়ে শেখ হাসিনাকে আসামি বলেছিলেন, ‘আপনাকে বিজয়ী ঘোষণা করে দেবো’। তিনি নির্বাচনী বরাদ্দের টাকার হিসাব দেননি এবং টাকা আত্মসাৎ করেছেন।”
আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, “তিনি ৭০ বছরের বৃদ্ধ। আমরা যেন ফ্যাসিস্ট হটাতে গিয়ে নিজেরাই ফ্যাসিস্ট না হয়ে যাই।” তবে শুনানি শেষে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে তিন দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।