দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দায়ের করা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় ঠিকাদার এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীম (জি কে শামীম) কে সাড়ে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই মামলায় তাঁর মা আয়েশা আক্তার খালাস পেয়েছেন।
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক মো. রবিউল আলম আজ এই রায় ঘোষণা করেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী বিল্লাল হোসেন প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জি কে শামীম বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। রায় ঘোষণার সময় তাঁকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। তবে তাঁর মা আয়েশা আক্তার পলাতক রয়েছেন।
মামলার এজাহার অনুযায়ী, শামীমকে গ্রেপ্তারের সময় তাঁর অফিসে অভিযান চালিয়ে তাঁর মায়ের নামে থাকা ১৬৫ কোটি ২৭ লাখ ৬৫ হাজার টাকার স্থায়ী আমানতের (এফডিআর) কাগজপত্র জব্দ করা হয়। দুদকের অভিযোগে বলা হয়েছে, আয়েশা আক্তার তাঁর ছেলে শামীমের অবৈধ উপার্জনের অর্থ নিজের নামে রেখে তাঁকে অপরাধে সহায়তা করেছেন। তবে আদালত আয়েশা আক্তারকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন।
এর আগে, ২০২২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় জি কে শামীম ও তাঁর সাত দেহরক্ষীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। এছাড়া ২০২৩ সালের ১৭ জুলাই মানি লন্ডারিং মামলায় শামীমকে ১০ বছর এবং তাঁর দেহরক্ষীদের প্রত্যেককে ৪ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
২০১৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ‘শুদ্ধি অভিযান’ শুরু করে। এরই অংশ হিসেবে ২০১৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার হন জি কে শামীম। তাঁর বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক এবং অর্থ পাচারসহ একাধিক মামলা দায়ের করা হয়।
দুদকের তদন্ত অনুযায়ী, শামীমের কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে ১ কোটি ৮১ লাখ ২৮ হাজার টাকা এবং ৭ লাখ ৪৭ হাজার টাকার সমপরিমাণ মার্কিন ডলার জব্দ করা হয়। দুদক জানিয়েছে, এই টাকার কোনো বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি।
অর্থ পাচারের অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, শামীমের ১৮০টি ব্যাংক হিসাবে প্রায় ৩৩৭ কোটি টাকার স্থায়ী আমানত রয়েছে। এ ছাড়া ঢাকায় দুটি বিলাসবহুল বাড়িসহ প্রায় ৫২ কাঠা জমির মালিক তিনি, যার বাজারমূল্য ৪১ কোটি টাকা। শামীম অস্ত্রধারী দেহরক্ষীদের ব্যবহার করে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি এবং অবৈধ লেনদেনের মাধ্যমে এই বিপুল সম্পদ গড়ে তুলেছেন।