ঈদের আগ-পরে বাজারে আসছে নতুন ডিজাইনের ব্যাংকনোট। তবে এবার ভিন্ন চমক—কোনো নোটেই থাকছে না বঙ্গবন্ধুর ছবি। বরং ইতিহাস, ঐতিহ্য, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও তারুণ্যকে প্রাধান্য দিয়ে সাজানো হয়েছে নতুন নোটের নকশা।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, ২৭ মে থেকে বাজারে আসবে ২০ টাকার নতুন নোট। এতে কান্তজিউ মন্দির ও একটি বৌদ্ধমন্দিরের চিত্র থাকবে। ২৯ বা ৩০ মে পাওয়া যাবে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের দুর্ভিক্ষের চিত্র ও আতিয়া মসজিদসংবলিত ৫০ টাকার নোট। আর ২ জুন বাজারে আসছে ১০০০ টাকার নোট, যাতে থাকবে বঙ্গভবন ও জাতীয় স্মৃতিসৌধের ছবি।
৫ টাকার নতুন নোটে থাকছে আবু সাঈদ ও মুগ্ধ নামের দুজন তরুণের অবয়ব, যারা আলোচনায় উঠে এসেছিল সামাজিক আন্দোলন ও ন্যায়ের পক্ষে সাহসী অবস্থানের কারণে। তবে ইউরোপ থেকে কাগজ সরবরাহে কিছুটা দেরি হওয়ায় এই নোট আসবে ঈদের পর।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশে ১৯৭২ সালে ১ টাকার নোট, ১৯৭৩ সালে ৫, ১০ ও ১০০ টাকা, ১৯৭৬ সালে ৫০ ও ৫০০ টাকা, ১৯৭৯ সালে ২০ টাকা, ২০০৯ সালের ১৭ জুলাই ১০০০ টাকা এবং সর্বশেষ ২০২০ সালে ২০০ টাকার নোট চালু হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান বলেন, ‘নতুন নোটের ডিজাইন চূড়ান্ত। ইতোমধ্যে কিছু নোটের ছাপার কাজও শুরু হয়ে গেছে। এইবার কোনো নোটে মানুষের মুখাবয়ব থাকবে না পুরোপুরি, বরং তারুণ্য, শহীদ, ইতিহাস, সংস্কৃতি ও প্রকৃতিকে গুরুত্ব দিয়ে ডিজাইন করা হয়েছে।’
গত বছর আগস্টে মাত্র ১৫ দিনের মধ্যে নোটের ডিজাইন চূড়ান্ত করার একটি প্রস্তাব আসে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, নিরাপত্তা উপাদান, কাগজ, ছাপা ও দরপত্রসহ নানা ধাপ শেষ করতে সাধারণত ৫-৭ মাস সময় লাগে। সেই সময়সীমা মেনেই এগোচ্ছে কাজ।
নতুন টাকার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
১০ টাকায় থাকবে তারুণ্যের ঐক্যের প্রতীক ও বায়তুল মোকাররম, ১০০ টাকায় সুন্দরবনের চিত্রা হরিণ ও রয়েল বেঙ্গল টাইগার, ২০০ টাকায় মসজিদ, মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডা এবং ৫০০ টাকায় থাকবে ঐতিহাসিক আহসান মঞ্জিল।
নতুন এসব নোটে ইতিহাস ও ঐতিহ্যের পাশাপাশি আধুনিক ডিজাইন ও নিরাপত্তা উপকরণ থাকছে। বাজারে এসব নোট চলবে বিদ্যমান পুরোনো নোটের পাশাপাশি।