পটুয়াখালীতে বস্তাভর্তি দেশীয় অস্ত্রসহ কনকদিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো: সিজান কাজী (২৪), তার ছোট ভাই মো: সিয়াম কাজী (১৯) ও কিশোর গ্যাংয়ের ১০ জন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি প্লাস্টিকের বস্তাভর্তি বিপুল পরিমাণ রাম-দা, গাছ কাটার-দা, লোহার রড, স্টিলের পাইপ ও লাঠিসোটা উদ্ধার করা হয়।
বুধবার (২২ মে) দিবাগত রাত ১২টার দিকে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কনকদিয়া বাজারের একটি বাসা থেকে অস্ত্রসহ তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার সিজান কাজী কনকদিয়া ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মো: মিজান কাজীর ছেলে।
এদিকে অপরাধীদের তথ্য ও ফুটেজ নিতে সাংবাদিকরা বুধবার রাতে বাউফল থানায় গেলে তাদের পুলিশ নিষেধ করে। থানার ডিউটি অফিসার এএসআই মো: কাউসার জানান, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছাড়া তাদের মিডিয়ার সাথে কথা বলার অনুমতি নেই। ওসি’র অনুমতি ছাড়া অস্ত্র এবং আসামিদের ছবি দেওয়া যাবে না।
পটুয়াখালীতে বস্তাভর্তি অস্ত্রসহ ১২ জনকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার (২১ মে) বাউফল উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের ফলা-ফল ঘোষণার পর কনকদিয়া বাজারে পরাজিত চেয়ারম্যানপ্রার্থী সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো: আব্দুল মোতালেব হাওলাদারের (ঘোড়া) সমর্থক মো: ডালিমের সাথে বিজয়ী প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো: মোশারেফ হোসেনের সমর্থক মো: সিজানের বাগবিতণ্ডা হয়।
এর জের ধরে বুধবার রাতে ডালিমসহ ৩ জনকে মারধর করে সিজান ও তার বেশ কয়েকজন সহযোগী। পরে সেদিন রাত ১২টার দিকে উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার উপস্থিতিতে কনকদিয়া বাজারে সিজানের বাড়িতে অভিযান চালায় বাউফল থানা পুলিশ। এ সময় সিজানের বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্রসহ তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
ভুক্তভোগী মো: ডালিম জানান, নির্বাচনের আগের দিন সোমবার (২০ মে) রাতে পরাজিত প্রার্থীর সমর্থক মো: শহিদুল ইসলামকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে বিজয়ী প্রার্থীর সমর্থক ইউপি চেয়ারম্যান মো: শাহিন হাওলাদার।
এ ঘটনায় নির্বাচনের দিন (২১ মে) গ্রেপ্তার হন শাহিন হাওলাদার। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বেপরোয়া হয়ে ওঠে এমপি গ্রুপের ছাত্রলীগ নেতা সিজান। এরপর আমাদের অনেক সমর্থকদের মারধরসহ অস্ত্র দেখিয়ে ঘর-বাড়ি ছাড়ার হুমকি দিতে শুরু করে তারা।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সিজানের বাবা মো: মিজান কাজী জানান, নির্বাচনে জেতার আনন্দে ওরা কয়েকেজন মিলে পিকনিক করছিলো। হঠাৎ কোনো কারণ ছাড়াই পুলিশ ওদের গ্রেপ্তার করে। আমরা রাজনীতি করি। আমাদের প্রতিপক্ষ রয়েছে। তাই নিজের আত্মরক্ষার জন্য বাসায় লাঠি-সোটা রাখতেই হয়। আমি বাসায় থাকলে পুলিশ ওদের ধরতে পারতো না।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (২৩ মে) খুব সকালে সাংবাদিকদের না জানিয়ে অভিযুক্তদের আদালতে সোপর্দ করা হয়।