ফেসবুকে অন্তর্বর্তী সরকার ও প্রধান উপদেষ্টাকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করার দায়ে চাকরিচ্যুত হয়েছেন লালমনিরহাট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সাবেক সহকারী কমিশনার (ম্যাজিস্ট্রেট) তাপসী তাবাসসুম ঊর্মি। বিভাগীয় মামলার প্রেক্ষিতে তাকে ‘চাকরি থেকে বরখাস্ত’ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
বুধবার (২ জুলাই) রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে, ২০২৩ সালের ৬ অক্টোবর তাপসী তাবাসসুম তার ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন। এই ঘটনায় সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ অনুযায়ী ‘অসদাচরণ’-এর অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়।
এরপর তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হলে তিনি নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে ব্যক্তিগত শুনানিতে অংশ না নিয়ে লিখিত জবাব দেন। তবে তার জবাব গ্রহণযোগ্য মনে না হওয়ায় একজন তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে গুরুদণ্ড দেয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
দ্বিতীয়বার কারণ দর্শানোর সুযোগ পেয়েও সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতে না পারায়, তদন্ত প্রতিবেদন ও সংশ্লিষ্ট নথিপত্র পর্যালোচনার পর তাকে ‘চাকরি থেকে বরখাস্তকরণ’ শাস্তি প্রদান করা হয়। এই সিদ্ধান্তে সম্মতি দেয় বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনও।
এ বিষয়ে রাষ্ট্রপতি ও কর্তৃপক্ষের প্রস্তাব অনুমোদন করেছেন বলে জানায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
উল্লেখ্যে, তাপসী তাবাসসুম তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে উদ্দেশ্য করে লিখেছিলেন, “সাংবিধানিক ভিত্তিহীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, রিসেট বাটনে পুশ করা হয়েছে। অতীত মুছে গেছে। রিসেট বাটনে ক্লিক করে দেশের সব অতীত ইতিহাস মুছে ফেলেছেন তিনি। এতই সহজ! কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গেছে আপনার, মহাশয়।”
এর আগে, তিনি শহীদ আবু সাঈদকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেন এবং ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েও বিভিন্ন স্ট্যাটাস দেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এইসব কার্যক্রমের পরিপ্রেক্ষিতেই তাকে ২০২৪ সালের ৬ অক্টোবর ওএসডি করা হয় এবং পরদিন সাময়িক বরখাস্তের আদেশ আসে। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলাও চলমান রয়েছে।