শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার সীমান্তবর্তী দরবেশতলা ও গজনী-বাকাকুড়া সড়কে বন্যহাতির আক্রমণে দুই দিনমজুরের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (২০ মে) রাতে মাত্র দেড় ঘণ্টার ব্যবধানে এই দুটি ঘটনা ঘটে। প্রথম ঘটনা ঘটে রাত ৯টার দিকে।
নিহতরা হলেন, কাংশা ইউনিয়নের দরবেশতলা এলাকার আকাশ (৩৮) ও গারো সম্প্রদায়ের এফিলিপ মারাক (৪০)। তাঁরা দুজনেই কৃষিকাজ ও দিনমজুরির মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করতেন।
স্থানীয়রা জানান, গতকাল সন্ধ্যার পর থেকেই বড় উপজেলার গজনীর দরবেশতলা এলাকার একটি লিচু বাগানে একদল বন্যহাতি হানা দেয়। হাতির আক্রমণ ঠেকাতে স্থানীয়রা মশাল ও সার্চ লাইট নিয়ে হৈচৈ করতে থাকেন। একপর্যায়ে হাতির দল ক্ষিপ্ত হয়ে তাড়া দিলে সবাই দৌড়ে পালিয়ে যান। তবে পা পিছলে পড়ে যান আকাশ। তখন একটি হাতি তাকে শুঁড়ে পেঁচিয়ে পায়ে পিষ্ট করে মেরে ফেলে।
অন্যদিকে রাত সাড়ে ১০টার দিকে আরও একজনে এক প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। এফিলিপ মারাকসহ চারজন কৃষক বাকাকুড়া এলাকা থেকে বড় গজনীর দিকে ফিরছিলেন। পথে শালবনের ভেতর থেকে একটি হাতির দল আচমকা আক্রমণ করে। তিনজন দৌড়ে পালিয়ে প্রাণে বাঁচলেও এফিলিপ হাতির কবলে পড়েন। একপর্যায়ে তাকেও শুঁড়ে পেঁচিয়ে ও পায়ে চাপা দিয়ে হত্যা করে বন্যহাতি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, গত কয়েকদিন ধরেই ২৫ থেকে ৩০টি বন্যহাতির দল ঝিনাইগাতী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘোরাফেরা করছে। তারা বোরো ধান, কাঁঠাল, লিচু বাগানসহ বসতবাড়ির কাছেও হানা দিচ্ছে। দুজনের মৃত্যুতে সীমান্ত অঞ্চলে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
ময়মনসিংহ বন বিভাগের রাংটিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুল করিম বলেন, “একই রাতে দুই জায়গায় বন্যহাতির আক্রমণে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। উভয় ঘটনাই কংশা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ঘটেছে। নিহতদের পরিবার আবেদন করলে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”