বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার মিয়ানমার সীমান্তবর্তী এলাকায় মফিজুর রহমান নামের এক বাংলাদেশি যুবককে ধরে নিয়ে গেছে মিয়ানমারের বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠী ‘আরাকান আর্মি’।
সোমবার (১০ এপ্রিল) সকালে ওই যুবককে আরাকান আর্মির সদস্যরা তুলে নিয়ে গেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা। এই ঘটনার পর থেকেই সীমান্তজুড়ে বিরাজ করছে চরম উত্তেজনা।
মফিজুর রহমান (২৫) নাইক্ষ্যংছড়ির সদর ইউনিয়নের ফুলতলী ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা, পিতা প্রয়াত পেঠান বলী। পেশায় তিনি একজন সাধারণ কাঠুরিয়া।
মফিজুরের মা নুরজাহান বেগম অশ্রুসজল নয়নে বলেন, “ঘটনার দিন সকালে সে আমাকে সালাম করে বাগানে কাঠ আনতে গিয়েছিল। ওর নিজের বাগান, নিজের জমি—সেখান থেকেই তাকে তুলে নিয়ে গেছে। আমার ছেলে কোনো দোষ করেনি, সে দিনমজুর মানুষ, গরিব ঘরের ছেলে। ওকে ফিরিয়ে দিন।”
ঘটনার পর থেকেই ফুলতলীসহ আশপাশের গ্রামে তীব্র ক্ষোভ দেখা দেয়। বুধবার সীমান্ত এলাকার একটি স্কুল প্রাঙ্গণে স্থানীয়রা বিক্ষোভ করেন। সেখানে মিয়ানমারের সঙ্গে সীমান্ত যোগাযোগ বন্ধ এবং মফিজুরের দ্রুত মুক্তির দাবি তোলেন তারা।
স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল ইসলাম আবু তাহের বলেন, “মুফিজ খুব ভালো ছেলে। কেন তাকে তুলে নিয়ে গেল, বুঝতেই পারছি না। এখন পুরো এলাকা উত্তাল, মানুষ ক্ষুব্ধ। আমরা মুফিজকে দ্রুত ফেরত চাই।”
বিজিবি-১১ অধিনায়ক ও জোন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল কপিল উদ্দিন কায়েস জানান,“ঘটনার পরপরই আমরা বিষয়টি গুরুত্বসহকারে নিয়েছি। দুই দেশের সংবেদনশীলতার কারণে কিছুটা সময় লাগছে, তবে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। আশা করছি, দ্রুত মুফিজকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।”
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, “বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে মন্তব্য করা ঠিক নয়। তবে পরিবারকে থানায় লিখিত অভিযোগ করার পরামর্শ দিয়েছি।”