মহাসড়কের পাশে লিমন এন্টারপ্রাইজ নামে অনুমোদনহীন জ্বালানি তেলের দোকানে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আগুনে তেলের দোকান পুড়ে যাওয়াসহ ৩তলা ভবনের দোতালায় থাকা সোস্যাল ইসলামি ব্যাংকের একটি উপ-শাখাও ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
শনিবার (০১ জুন) রাত ১১টার দিকে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার হাসপাতাল রোডে লিমন এন্টারপ্রাইজ নামে জ্বালানি তেলের দোকানে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ আগুনে পেট্রোল, ডিজেল, অকটেন, গ্যাস সিলিন্ডার ও টায়ারসহ পুড়ে গেছে প্রায় অর্ধ কোটি টাকার মালামাল।
উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে, কয়েক মাস আগেই জিন্নাহর জ্বালানি তেল ও এলপি গ্যাস বিক্রির ওই প্রতিষ্ঠানে অনুমোদনহীনভাবে দাহ্য পদার্থ রাখার দায়ে জরিমানা এবং বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিলো।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন জিহাদী জানান, ৩ মাস আগে আগুনে পুড়ে যাওয়া ওই প্রতিষ্ঠানটিকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছিলো। মহাসড়কের পাশ থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশনাও দেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠানটির মালিক সেখান থেকে সরে যাওয়ার জন্য কিছু সময় প্রার্থনা করেছিলেন। এর মধ্যেই এ অগ্নিকাণ্ড ঘটলো। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে মহাসড়কের ধারে গড়ে ওঠা এ ধরনের সকল প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, শনিবার রাত ১১টার দিকে ভবনটির নিচতলার জিন্নাহর জ্বালানি তেলের দোকান থেকে এ আগুনের সূত্রপাত ঘটে। পরে এ আগুন দ্রুত ভবনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় ছড়িয়ে পড়তে থাকে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করেন। এর কিছুক্ষণ পর পানি ফুরিয়ে গেলে প্রায় আধাঘণ্টা আগুন নেভানোর কাজ বন্ধ ছিলো।
আর এ সময়ের মধ্যে আগুন আরো ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। থেমে থেমে গ্যাসের সিলিন্ডারগুলোর বিস্ফোরণ ঘটতে থাকে। পরে পাশের একটি জলাশয় থেকে পানি এনে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। ভয়াবহ এ অগ্নিকাণ্ডে মহাসড়কের পাশে থাকা এগারো কেভি বৈদ্যুতিক সংযোগের তার পুড়ে গিয়ে আশপাশের এলাকায় বিদুৎ সরবারহ বন্ধ যায়। পরে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করেন নেসকোর একটি দল।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বগুড়ার সহকারী পরিচালক মো: মঞ্জিল হক জানান, আগুনে জ্বালানি তেলের পুরো দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ব্যাংকের কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আগুন লাগার সঠিক কারণ এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তদন্ত করে পরে জানানো যাবে। শেরপুর ছাড়াও পার্শ্ববতী বগুড়া, শাজাহানপুর, ধুনট ও চান্দাইকোনা ফায়ার স্টেশনের ৮টি ইউনিটের ৩ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এ সময় আহত হোন এক দমকল কর্মী।
আগুনে প্রায় অর্ধকোটি টাকার মালামাল পুড়ে গেলেও লিমন এন্টারপ্রাইজের মালিক জিন্নাহ এবং ভবন মালিক মো: দুলাল রহমানকে ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়নি।