বগুড়ার শেরপুর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের বড়িতলী গ্রামে পূর্বের বালু ব্যবসা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে একজন সাবেক বালু ব্যবসায়ীর বাড়িতে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রসহ সংঘবদ্ধ হামলার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেওয়া হলেও তদন্তকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পক্ষপাতমূলক আচরণ ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ উঠেছে।
ভুক্তভোগী মোঃ জোবায়ের রহমান (জবান) রোববার (১৫ জুন) দুপুরে শেরপুর উপজেলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, তিনি পূর্বে বালুর ব্যবসা করতেন এবং সেই সূত্রে তার ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিলো মোঃ চার্লি সরকারের সঙ্গে। কিন্তু পরবর্তীতে হিসাবসংক্রান্ত জটিলতা ও বিরোধের কারণে ব্যবসা থেকে সরে দাঁড়ান। এ নিয়ে চার্লি সরকার ও তার ছোট ভাই মোঃ শ্রাবন সরকারসহ সহযোগীরা তার কাছে চাঁদা দাবি ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিল।
জোবায়ের দাবি করেন, শ্রাবন সরকার বগুড়ার জেলা বিএনপির উপদেষ্টা শফিকুল ইসলাম তোতার মেয়ে জামাই, এই পরিচয়ের জোরে সে এলাকায় প্রভাব খাটায় এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করে আসছে। সর্বশেষ ১২ জুন সন্ধ্যায় দেশীয় অস্ত্রসহ ১৫-২০ জনের একটি দল তার বাড়িতে হামলা চালায়। তারা তাকে না পেয়ে ঘরের দরজা, জানালা ও টিনের বেড়া ভাঙচুর করে প্রায় এক লক্ষ টাকার ক্ষতি সাধন করে।
পরদিন ১৩ জুন তিনি শেরপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্তদের মধ্যে ছিলেন মোঃ শ্রাবন সরকার, মোঃ প্লাবন মন্ডল, মোঃ শামীম, মোঃ ময়না চৌধুরী ও আরও অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা। তবে অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে গিয়ে এসআই আমিরুল ইসলাম অভিযোগকারীর পরিবারকে ভয় দেখান বলে জোবায়েরের দাবি।
জোবায়ের বলেন, “তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আমিরুল ইসলাম কোনো তদন্ত না করে আমার বৃদ্ধ বাবাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে এক লক্ষ টাকা দাবি করেন। আরও বিস্ময়ের বিষয় হলো, তার সঙ্গে ছিলেন অভিযুক্তদের মধ্যে দুইজন-আবু বক্কার ও চার্লি সরকার। ভয়ে আমার বাবা ও শ্বশুর গজারিয়া গ্রামের চান মাস্টারের বাড়িতে গিয়ে সেই টাকা তাদের হাতে তুলে দেন।”
জোবায়েরের বাবা মোঃ তছের উদ্দিন বলেন, “আমার ছেলে এখনো নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। পুলিশ যখন বিবাদীদের সাথে নিয়ে এসে টাকার দাবী করেছে, ঝামেলা এড়াতে তাদেরকে টাকা দিয়েছি। এখন আমরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি।”
অন্যদিকে অভিযুক্ত শ্রাবন সরকার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “জোবায়ের একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। এলাকাবাসী নিয়ে আমরা তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়েছিলাম। কোনো হামলা হয়নি। আর টাকা নেওয়ার বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।”
তদন্তকারী কর্মকর্তা শেরপুর থানা-পুলিশের এসআই আমিরুল ইসলাম বলেন, “আমি নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করেছি। অভিযোগকারী পক্ষের দাবি সত্য নয়। জোবায়েরের বাবা নিজেই টাকা পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। আমি তাদের আপোষের পরামর্শ দিয়েছি মাত্র।”
এ বিষয়ে শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস এম মঈনুদ্দিন বলেন, “তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ সত্য হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। নিরাপত্তার প্রয়োজন হলে অভিযোগকারী থানায় যোগাযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”