আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত নেত্রকাণার-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ এই মামলার সকল আসামিকে খালাস দিয়েছে হাইকোর্ট।
এই সংক্রান্ত দুটি ডেথ রেফারেন্স নাকচ করে আসামিদের আপিল মঞ্জুর করে এই রায় দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে বিচারিক আদালতের রায়কে অবৈধ ঘোষণ করেছে হাইকোর্ট।
রবিবার (০১ ডিসেম্বর) বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেন।
এর আগে, গত ২১ নভেম্বর একই হাইকোর্ট বেঞ্চ এই মামলার ডেথ রেফারেন্স আপিল শুনানি শেষ করেন। ওই দিন বিষয়টি রায়ের জন্য মামলা অপেক্ষমান রাখে (সিএভি) আদালত। সেই রায় আজ ঘোষণা করা হলো।
প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর বিচারিক আদালত বিএনপির সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও বিএনপি নেতা আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। একই সঙ্গে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান (বর্তমানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান) তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। বিভিন্ন মেয়াদে মামলা অপর ১১ আসামিকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পরে ওই বছরের ২৭ নভেম্বর মামলার বিচারিক আদালতের রায় প্রয়োজনীয় নথিসহ হাইকোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখায় পৌঁছায়।পাশাপাশি কারাবন্দী আসামিরা আপিল করেন। ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসের এই মামলার আপিল শুনানি বিচারপতি সহিদুল করিমের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে শুরু হয়। এর মধ্যে ওই বেঞ্চ পুনর্গঠন করা হয়। এর ফলে নতুন বেঞ্চে আবার মামলার শুনানি শুরু হয়।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফারুক আহমেদ বাদী হয়ে হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দুটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্ত শেষে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৮ সালের ১১ জুন অভিযোগপত্রে বিএনপির সাবেক উপ-শিক্ষামন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু, মাওলানা তাজউদ্দিন ও তাঁর ভাই হুজি নেতা মুফতি আবদুল হান্নানসহ ২২ জনকে আসামি করা হয়। ২০০৯ সালের নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পর অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেয় আদালত। এরপর প্রায় দুই বছর মামলার তদন্তের পর ২০১১ সালের ৩ জুলাই ৩০ জনকে আসামি করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এর ফলে এই মামলায় মোট আসামির সংখ্যা হয় ৫২।