বগুড়ার শেরপুরে আদালতের রায়ে ৫৩ বছর পর নিজের ৫৪ বিঘা জমি ফিরে পেলেন শিবপ্রসাদ সরকার ও তার পরিবারের সদস্যরা। সোমবার (৮ জুলাই) দুপুর ১টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিভিন্ন প্লটে ৫৪ বিঘা জমি পরিমাপ করে তাদেরকে দখল বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
এসময় বগুড়া জজ আদালতের পক্ষ থেকে এ্যাডভোকেট ও সার্ভে কমিশনার মোঃ আব্দুল লতিফ, বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মী, শিব প্রসাদ সরকার ও তার পরিবারের সদস্যগণ এবং শেরপুর থানা পুলিশের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, শিব প্রসাদের পিতা ভক্তি প্রসাদ। বগুড়ার শেরপুর উপজেলার খানপুরের ভীমজানি গ্রামে ছিলো তার বসবাস। ১৯৪৭ ভারত পাকিস্তান বিভাগের সময় তার বাবা ভারতে চলে যান। কিন্তু মাত্র এক বছর পরেই আবার তিনি ফিরে আসেন।
এর পর ১৯৬৫ সালে ভারত পাকিস্তান যুদ্ধ শুরু হলে নিরাপত্তহীনতার কারণে তারা আবার ভারতে গিয়ে ১৯৬৮ সালে ফিরে আসেন। এরপর ১৯৭১ সালে শুরু হয় মহান মুক্তিযুদ্ধ। মে মাসে স্বাধীনতা বিরোধীরা তাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে লুটপাট চালায়। অগ্নী সংযোগ করে সব কিছু পুড়িয়ে ফেলা হয়।
তারা প্রাণ ভয়ে আবারও ভারতে পালিয়ে যান। দেশ স্বাধীন হওয়ার ৫ বছর পর দেশে ফিরে আসেন তারা। কিন্তু ফিরে পাননি কোন কিছুই। তাদের সব সম্পত্তি দখল হয়ে গেছে। ততদিনে সেগুলোকে অর্পিত সম্পত্তি ঘোষণা করেছে সরকার। নিরুপায় হয়ে বগুড়া শহরের কলোনী এলাকায় বসবাস শুরু করেন তারা।
অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন পাশ হলে তারা আদালতে মামলা করেন। দীর্ঘ আইনী লড়াই শেষে আদালতে রায়ে জমি ফিরে পেলেন তারা। গত ২০ জুন বগুড়া জজ আদালতের সিনিয়র সহকারী জজ সঞ্চিতা বিশ্বাস এ রায় প্রদান করেন।
শিব প্রসাদ সরকার বলেন, আমরা দীর্ঘ আইনী লড়াই করেছি। অবশেষে সত্যের জয় হয়েছে। ৫৩ বছর পর আমরা পৈতৃক সম্পত্তি ফেরৎ পেয়েছি। তবে ভূমিদস্যুরা আবার যাতে আমাদের সম্পত্তি দখল করতে না পারে এজন্য স্থানীয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
বগুড়া জজ আদালতের এ্যাডভোকেট ও সার্ভে কমিশনার মোঃ আব্দুল লতিফ বলেন, আমরা আদলতের রায় অনুযায়ী প্রকৃত মালিককে সম্পত্তির দখল বুঝিয়ে দিতে এসেছি। এখন পর্যন্ত কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।