গ্রীষ্মের রোদে ক্লান্ত দেহ খুঁজে ঠান্ডা শান্তি আর সেখানেই রাজত্ব করছে ডাব। এই মৌসুমেই দেশের নানা প্রান্তে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে পিরোজপুরের নেছারাবাদের সুস্বাদু ডাব। গ্রামের গাছ থেকে নামিয়ে ৫০-৬০ টাকায় কেনা ডাব ঢাকায় পৌঁছে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকায়।
পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার অলংকারকাঠি, মাহমুদকাঠি, কুনিয়ারি ও রায়ারহাটসহ আশপাশের এলাকা থেকে প্রতিদিন গড়ে ৫ থেকে ৭ লাখ টাকার ডাব কেনাবেচা হয়। এলাকার গাছিরা ভোরে ঘুরে ঘুরে নারিকেল গাছের মালিকদের কাছ থেকে ডাব সংগ্রহ করেন। এরপর সেই ডাব স্থানীয় পাইকারদের কাছে ৫-১০ টাকা লাভে বিক্রি করেন তারা।

নেছারাবাদ এলাকার গাছি মো. মোস্তফা বলেন, “গাছ মালিকের সঙ্গে আগেই দরদাম করে ডাব সংগ্রহ করি। দুপুরের পর এগুলো পাইকারদের হাতে তুলে দিই।” পাইকারেরা এসব ডাব একত্র করে ট্রাকযোগে পাঠান রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন বড় শহরে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী নুরুজ্জামান জানান, অনেক পাইকার একেকবারে দেড়শ থেকে দুইশ পিস ডাব কিনে বাজারে আনেন। শহরে এসে এই ডাবের দাম দাঁড়ায় তিন গুণেরও বেশি।
তবে এত দামের কারণ শুধুই মধ্যস্বত্বভোগী নয়। পিরোজপুর কৃষি বিভাগ বলছে, গাছি, পাইকার, পরিবহনকারী ও শহরের খুচরা বিক্রেতা সবাই কিছুটা করে লাভ রাখেন। সেই সঙ্গে শহরের দোকানভাড়া, শ্রমিক খরচ, পরিবহন ব্যয় আর গরমে চাহিদার কারণে দাম চড়তেই থাকে।
এদিকে ভোক্তার স্বার্থ রক্ষায় প্রশাসনও সজাগ। পিরোজপুর জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক দেবাশিস রায় বলেন, “আমরা আগেও ডাব নিয়ে অভিযান চালিয়েছি। এবারও করব। দেখা হবে কত টাকায় ডাব কেনা হচ্ছে, আর কত টাকায় বিক্রি হচ্ছে।”
ডাবের উৎপাদন বাড়াতে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হচ্ছে নানা উদ্যোগ। নেছারাবাদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জানান, “বাড়ির আঙিনায় বেশি করে নারিকেল গাছ লাগাতে আমরা মানুষকে উদ্বুদ্ধ করছি। এতে যেমন নিজেদের চাহিদা মেটাবে, তেমনি আর্থিকভাবে সাবলম্বী হওয়াও সম্ভব।”
তিনি আরও বলেন, কেউ যদি নারিকেল গাছের বাগান করতে চান, উপজেলা প্রশাসন সব ধরনের সহযোগিতা করবে।