দখলদার ইসরায়েলের অব্যাহত হামলায় রক্তাক্ত হয়ে উঠেছে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) সকালে নতুন করে চালানো এক ভয়াবহ বিমান হামলায় দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস শহরে একই পরিবারের ১৩ জন সদস্য নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গভীর শোক নেমে এসেছে গোটা উপত্যকায়।
আল-জাজিরা সূত্রে জানা গেছে, ইসরায়েলি বাহিনীর এই হামলা ছিল অত্যন্ত নিখুঁতভাবে পরিচালিত, যার লক্ষ্যবস্তু ছিল বেসামরিক একটি আবাসিক এলাকা। প্রাণ হারানো ব্যক্তিদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই বেশি।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্যমতে, চলমান এই আগ্রাসনে এ পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৫১ হাজার ৬৫ জন, এবং আহত হয়েছেন আরও এক লাখ ১৬ হাজার ৫০৫ জন। তবে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস দাবি করেছে, মৃতের প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়েও অনেক বেশি—৬১ হাজার ৭০০ জন। কারণ ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও অনেক মানুষ চাপা পড়ে আছেন, যাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে নিহতদের তালিকায়।
এদিকে জাতিসংঘ জানিয়েছে, চলতি বছরের ১৮ মার্চ হামাসের সঙ্গে স্বাক্ষরিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে ইসরায়েল যখন নতুন করে হামলা শুরু করে, তখন থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় পাঁচ লাখ গাজাবাসী আবারও বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। যুদ্ধ, অনাহার ও নিরাপত্তাহীনতার দোলাচলে নিঃস্ব এই জনগোষ্ঠী দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
মানবিক সহায়তার অভাবে ধুঁকছে পুরো গাজা। চিকিৎসা, খাদ্য ও পানীয় জলের সংকট এখন চরমে। আন্তর্জাতিক মহলের নীরবতা এবং কার্যকর হস্তক্ষেপের অভাব পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।
এই যুদ্ধ থামানোর আহ্বান জানিয়ে বিশ্বজুড়ে চলমান প্রতিবাদ-বিক্ষোভ যেন আরেকবার স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে—গাজার প্রতিটি মৃত্যুই এক একটি মানবতার অপমৃত্যু।