বগুড়ার শেরপুরে কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির কার্যালয় দখল ও হামলার ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) বেলা পৌনে দুইটার দিকে শহরের সান্যালপাড়া মোড়ে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এর প্রতিবাদে ওষুধ ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ রেখে ধর্মঘটে নেমেছেন, যা বিকেল ৫টা পর্যন্ত অব্যাহত ছিল।
সমিতির সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক জানান, চার-পাঁচজন সদস্য অজ্ঞাত ২৫ জনের সহযোগিতায় কার্যালয়ের তালা ভেঙে দখল করে। তিনি প্রতিবাদ জানালে তার ওপর হামলা চালানো হয়। তার দাবি, হামলার সময় পুলিশ উপস্থিত থাকলেও যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি, তবে পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এই ঘটনায় জহুরুল ইসলাম, ফরহাদ হোসেন, সাইফুল ইসলাম ও আব্দুল মজিদের নাম উঠে এসেছে। অভিযোগ অনুযায়ী, আরও ২৫ জন অজ্ঞাত ব্যক্তি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত, যারা কেউই সমিতির সদস্য নন।
এছাড়াও সমিতির বর্তমান কমিটির মেয়াদ এখনো শেষ হয়নি বলে দাবি করেছেন আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, স্থানীয় কিছু সদস্য সন্ত্রাসীদের ভাড়া করে কার্যালয় দখল করেছে। তারা থানায় অভিযোগ করতে গেলে পথে আবারও হামলার শিকার হন। ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা হামলাকারীদের গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, হামলাকারীদের মধ্যে কয়েকজন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত, আবার অনেকে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। তারা প্রশাসনের কাছে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
এদিকে, শেরপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকার ওষুধ ব্যবসায়ী মোকাম্মেল হোসেন অভিযোগ করেন, কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতিকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করার অপচেষ্টা চলছে। কিছু ব্যক্তি অবৈধ স্বার্থ হাসিলের জন্য কার্যালয় দখল করেছে এবং সদস্যদের ওপর হামলা চালিয়েছে। পাশাপাশি, অবৈধ আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে ব্যবসায়ীদের জিম্মি করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
তবে অভিযুক্ত জহুরুল ইসলাম এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন। তিনি দাবি করেন, সমিতির আহ্বায়ক কমিটি নিয়মতান্ত্রিকভাবে গঠন করা হয়েছে এবং তিনি ওই কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক।
শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি, খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশিক খান জানান, কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।