বগুড়ায় প্রিজাইডিং অফিসার, এজেন্টসহ ৬ জনকে আটক করা হয়েছে। ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে বগুড়ায় ৩ উপজেলার নির্বাচনে জাল ভোট প্রদান, দাযিত্বে অবহেলার অভিযোগে প্রিজাইডিং অফিসারসহ ৩ ভোটগ্রহন কর্মকর্তাকে অব্যাহতি, প্রিজাইডিং অফিসার ও প্রার্থীর এজেন্টকে আটকের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়েছে।
বুধবার (০৮ মে) বগুড়ার গাবতলীর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে রামেশ্বরপুর ইউনিয়নের একটি কেন্দ্রে ব্যালট পেপার বাহিরে দেওয়ার অভিযোগে প্রিজাইডিং অফিসার ও প্রার্থীর এজেন্টকে আটক করেছে পুলিশ। সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ শেষে প্রতি কেন্দ্রে ভোট গণনা শুরু করেছে নির্বাচনে দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্টরা।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মাঝপাড়া কুসুম কলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে তাদের আটক করা হয়। তারা হলো, প্রিজাইডিং অফিসার মো: শাহজাহান আলী ও এজেন্ট মো: এরশাদ আলী।
এসব তথ্য নিশ্চিত করে বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন রঞ্জন জানান, প্রিজাইডিং অফিসার শাহজাহান আলী ৯শ’ ব্যালট পেপার স্বাক্ষর ও সিলসহ এজেন্ট এরশাদ আলীর মাধ্যমে কেন্দ্রের বাহিরে পাঠান।
এরপর বিভিন্ন ভোটারের মাধ্যমে ৩শ’ ব্যালট বক্সে ফেলা হয়। পরবর্তীতে এরশাদকে আটক করে ৬শ’ ব্যালট উদ্ধার করা হয়। পরে প্রিজাইডিং অফিসারের কাছ থেকে আরও ৯শ’ ব্যালটের মুড়ি উদ্ধার করা হয়।
একই দিনে জেলার সোনাতলা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জাল ভোট দেয়ার সময় ৪ কিশোরকে আটক করা হয়েছে। দুপুর ১টার দিকে উপজেলার ৪নং রশিদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটেছে। প্রিজাইডিং অফিসার মো: মাইদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, তারা ৪ জন গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা থেকে এসেছেন। ব্যালট চাইতে গেলে সন্দেহ হয়। পরে বাবার নাম জানতে চাইলে বলতে না পারার কারণে তাদেরকে আটক করে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে দেয়া হয়।
চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মির্জা শায়লা জানান, জাল ভোট দেয়ার সময় তাদেরকে আটক করা হয়। এদের মধ্যে ২ জন প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তাদের ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাণ্ড দেয়া হয়।
তারা হলেন, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বুড়োবুড়ি গ্রামের মো: মফিজার রহমানের ছেলে খোকন (১৯) ও মৃত মো: হামিদ সরকারের ছেলে সজিব (২১)। এছাড়া অন্য ২ জন অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় তাদেরকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। এদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের জন্য বলা হয়েছে।
এ ব্যাপারে সোনাতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবু কুমার সাহা জানান, ৪ জনকে আটক করে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন।
উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপে বগুড়ার গাবতলী, সোনাতলা ও সারিয়াকান্দি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ১১ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১০ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১১ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।
এর মধ্যে শুধু সোনাতলা উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে যুবলীগ নেতা ফিদা হাসান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতা নির্বাচিত হয়েছেন।
৩ উপজেলায় ২২২টি কেন্দ্রে ও ১ হাজার ৩’শ বুথে প্রত্যক্ষ ব্যালটের মাধ্যমে ভোটগ্রহন হয়। প্রতিটি উপজেলায় জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট, প্রতিটি ইউনিয়নে নির্বাহি ম্যাজিষ্ট্রেট, কেন্দ্রগুলোতে পুলিশ সদস্য মোতায়েনসহ র্যাব, বিজিবি, পুলিশ ও স্ট্রাইকিং ফোর্স দায়িত্ব পালন করেছেন।