বগুড়ায় কোটা আন্দোলনে শিক্ষক সেলিম হোসেন (৩৫) নিহতের ঘটনায় আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ দলটির ১০১ জন নোত-কর্মীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা হয়েছে।
নিহত সেলিম হোসেনের বাবা মো: সেকেন্দার আলী বাদী হয়ে শুক্রবার (১৬ আগস্ট) সকালে বগুড়া সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরকে হত্যার আদেশদাতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
নিহত সেলিম হোসেন বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার পীরব ইউনিয়নের পালিকান্দা গ্রামের বাসিন্দা। মামলায় আসামিদের মধ্যে আওয়ামী লীগের দুইজন সাবেক সংসদ সদস্য, ২ জন মেয়র, ৫ জন উপজেলা চেয়ারম্যান, বগুড়ার পৌরসভার ৮ জন মেম্বার, ইউনিয়ন পরিষদের ১০ জন চেয়ারম্যান ও ২৫ জনপ্রতিনিধি আছেন। এ ছাড়াও অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৩৫০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
উল্লেখযোগ্য মামলার আসামিরা হলেন, বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বগুড়া-৫ (শেরপুর-ধুনট) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মজিবর রহমান মজনু, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ-সম্পাদক ও বগুড়া-৬ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রাগেবুল আহসান রিপু, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি টি. জামান নিকেতা, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম মোহন, এ. কে. এম. আসাদুর রহমান, সাগর কুমার রায়, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহাদৎ আলম, শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি রফি নেওয়াজ খান, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল হাসান, বগুড়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রির সভাপতি জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ মাসুদুর রহমান, চেম্বারের সহসভাপতি ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাফুজুল ইসলাম, শহর আওয়ায়ী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল মান্নান আকন্দ, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু সুফিয়ান। জেলা যুবলীগের সভাপতি শুভাশীষ পোদ্দার লিটন, সাধারণ-সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সাজেদুর রহমান, সাধারণ-সম্পাদক জুলফিকার রহমান, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সজীব সাহা, সাধারণ সম্পাদক আল মাহিদুল ইসলাম জয়, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক ২ সভাপতি আল রাজি জুয়েল ও নাঈমুর রাজ্জাক, সাবেক ২ সাধারণ-সম্পাদক মাশরাফি হিরো ও অসীম কুমার রায়।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, বগুড়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত (৪ আগস্ট) দুপুর ৩টার দিকে শহরের সাতমাথায় স্টেশন সড়কে আইএফআইসি ব্যাংকের সামনে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য মজিবর রহমান মজনু ও রাগেবুল আহসান রিপুসহ ৭ জন নেতার নেতৃত্বে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালানো হয়। এ সময় তারা ককটেল ও পেট্রোলবোমা হামলাও চালান। হামলায় শিক্ষক সেলিম হোসেন গুরুতর আহতন। এপর বগুড়া পৌরসভার কাউন্সিলর আবদুল মতিন ও আমিনুল রামদা দিয়ে কুপিয়ে এবং কাউন্সিলর আরিফুর হকিস্টিক দিয়ে পিটিয়ে তাকে জখম করেন। পরে অন্য হামলাকারীরা অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে তার মৃত্যু নিশ্চিত করেন।
বগুড়া জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও আইনজীবী আবদুল বাসেত জানান বলেন, শিক্ষক সেলিম হোসেন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাননি। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশে তাকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় এই দুজনকে হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে আসামি করা হয়েছে।