দেশের বাজারে বেড়েছে কাঁচা মরিচের দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ৪০ থেকে ৬০ টাকা বেশি দামে কিনছেন ক্রেতারা। এর পাশাপাশি বেড়েছে বিভিন্ন সবজির দাম। তবে কয়েক ধরনের মাছ, সোনালি ও ব্রয়লার মুরগি এবং ফার্মের মুরগির ডিমের দাম কিছুটা কমেছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, শেওড়াপাড়া ও টাউন হল বাজারে সরেজমিন ঘুরে বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জিনিসপত্রের দর-দামের এসব তথ্য জানা যায়।
বিক্রেতারা জানিয়েছেন, বাজারে পণ্যের সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। এর আগে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ও সরকার পরিবর্তনের পর সৃষ্ট সহিংস পরিস্থিতিতে ১ মাস ধরে দেশের বাজারে জিনিসপত্রের দাম বেশ ওঠানামা ছিলো। তবে এখন অধিকাংশ পণ্যের ক্ষেত্রে দাম অনেকটা নিয়ন্ত্রনে এসেছে।
খরা ও বন্যার কারণে সবজির উৎপাদন অনেকটা কমে যাওয়ায় কোরবানি ঈদের সময় খুচরা বাজারে কাঁচা মরিচের দাম উঠেছিলো ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি। তারপর জুলাই মাসে সারাদেশে সহিংস পরিস্থিতির মধ্যে কাঁচা মরিচের দাম ৩৫০ টাকা ছাড়ায়।
যা চলতি মাসের শুরুতে কিছুটা কমে আসে। গেল সপ্তাহে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছিল ১৮০ থেকে ২০০ টাকা করে। তবে গতকাল সেই দাম আবার বেড়ে ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা যায়।
দীর্ঘ সময় ধরে বাজারে আলু ও পেঁয়াজ বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারভেদে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ এখন ১১০ থেকে ১২০ টাকা ও আলু ৬০ থেকে ৬৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সরকারি সংস্থা টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, মাত্র ১ বছরের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম ৩০ শতাংশ ও আলুর দাম ৫০ শতাংশ বেড়েছে।
আরেকদিকে মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে কয়েক ধরনের মাছ, সোনালি ও ব্রয়লার মুরগির দাম কমেছে। বৃহস্পতিবার প্রতি কেজি তেলাপিয়া ২২০ থেকে ২৫০ টাকা, রুই ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা ও পাঙাশ মাছ ২০০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
আগের ২ সপ্তাহে এসব মাছে কেজিতে ৩০ থেকে ৫০ টাকা বাড়তি দাম ছিলো। গরুর মাংস ও ইলিশ মাছের দামও সামান্য কমেছে। ফার্মের মুরগির ডিমের দাম প্রতি ডজনে ৫ টাকা কমে গিয়ে ১৪৫ টাকা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিভিন্ন রকমের সবজিও গত সপ্তাহের তুলনায় কিছুটা বেশি দামে বিক্রি হয়েছে। যেমন গতকাল বাজারভেদে প্রতি কেজি ঢ্যাঁড়স, পটল, চিচিঙ্গা ও ঝিঙে ৫০-৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আর বেগুন, করলা, বরবটি ও কাঁকরোল বিক্রি হয়েছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। এসব সবজির দাম এক সপ্তাহ আগে অন্তত ১০ থেকে ২০ টাকা কম ছিলো।
সবজির আড়ত দারেরা জানিয়েছেন, সহিংসতা ও ডাকাতির আশঙ্কায় গেল সপ্তাহে সবজি পণ্যের সরবরাহ অনেকটা কম ছিলো। এতে বিভিন্ন উৎপাদন স্থল এবং পাইকারি মোকামে সবজি কম দামে বিক্রি হয়েছিলো। তবে এখন বাজারে সবজির সরবরাহ ঠিক হয়েছে এবং বিভিন্ন সড়কে চাঁদাবাজিও নেই। এ কারণে বাজারে বর্তমানে সবজি স্বাভাবিক দামেই বিক্রি হচ্ছে।
তবে ক্রেতারা এ ধরনের কথা মানতে নারাজ। মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে গৃহিণী আফরোজা বেগমের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগের সরকার চলে যাওয়ার পর গেল সপ্তাহে বিভিন্ন সবজির দাম অনেকটা কম ছিলো। ব্যবসায়ীরা এতো সবজি লোকসানে তো বিক্রি করেননি, কিন্তু এখন আবার সবজির দাম বাড়ছে। বাজার মনিটরিং করলে এই দাম বাড়ানো আটকানো যেত।