বগুড়ার শেরপুরে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে হামলা, মারধর ও বাড়িঘর লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের স্বরো গ্রামে মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। এর প্রেক্ষিতে আঃ রশিদের ছেলে ইকবাল হোসেন (২৯) বাদী হয়ে ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে শেরপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
জানা যায়, জমি নিয়ে পূর্ব শত্রুতার জেরে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আঃ রশিদ ও তার স্ত্রীকে মারধর করে বাড়ি ঘর লুটপাট সহ তাদেরকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে এবং ইকবাল হোসেন হামলার ভয়ে এখনও বাড়িছাড়া রয়েছেন। মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে হামলা করে বাড়িতে গচ্ছিত নগদ ৩ লাখ টাকা, ৩ ভরি সোনা, ৪ ভরি রুপার গহনাসহ প্রায় সারে ৬ লাখ টাকার লুটপাট করা হয়েছে। এসময় অভিযুক্তরা বাড়ির বাহির থেকে দরজায় তালা লাগিয়ে সন্ধা পর্যন্ত তাদেরকে অবরুদ্ধ করে রাখে।
ইকবাল হোসেন বলেন, আমার পরিবার হামলার শিকার হওয়ার খবর পেয়ে থানা পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি। কিন্তু অভিযোগ করেও আজ ৬ দিন যাবৎ বাড়ি ফিরতে পারিনি। আমার বাবা-মা আহত অবস্থায় শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এমতাবস্থায় আমি ও আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত মো: ইরফান আলী ও স্থানীয়রা জানান, আঃ রশিদ আমার কাছ থেকে তিন শতক জমি লিখে নেওয়ার কথা বলে সাড়ে তিন শতক জমি লিখে নিয়েছে এবং যে দাগ থেকে নেওয়া কথা তা না নিয়ে মহাসড়ক সংলগ্ন একটি দাগ থেকে দলিল করে নিয়েছে আমরা অশিক্ষিত হওয়ায় বুঝতে পারিনি। এ ঘটনায় স্থানীয়ভাবে একাধিকবার দরবার হয়েছে কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি। আমরা কাউকে মারধর করিনি।
অন্যদিকে একই গ্রামের আশরাফ আলী শেখ বেশ কিছুদিন আগে আঃ রশিদ ও তার পরিবারে বিরুদ্ধে জমিজমা ও টাকাপয়সা সংক্রান্ত একটি অভিযোগের সাক্ষী হওয়ায় তার স্ত্রী ও বোনকে মারধর করা হয়েছে মর্মে থানায় পৃথক একটি অভিযোগ করেছেন। আঃ রশিদ, ইকবাল হোসেন সহ ৪ জনের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেন। অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, ২৭ আগস্ট বেলা সারে ১০ টার দিকে খলিলুর রহমানের দায়ের করা পূর্বের একটি অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত করতে আসে পুলিশ ও সেনাবাহীনির সদস্যরা। তদন্ত করে ফিরে যাওয়ার পরেই অভিযোগের সাক্ষী হওয়ায় আশরাফ আলীর স্ত্রী ও চাচাতো বোনকে মারধর করেন আঃ রশিদ সহ অভিযুক্তরা।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আঃ রশিদ বলেন, আমার বাড়িতে আমি ও আমার বৃদ্ধা স্ত্রী ছাড়া আর কেউ থাকে না। আমি একজন ব্রেন স্ট্রোক ও প্যারালাইসিসের রোগী। আমার একমাত্র ছেলে ইকবাল শেরপুরে থাকে। আমার সাথে তারা অন্যায় ভাবে অত্যাচার করছে। এলাকার কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড মেম্বর আরিফ জানান, আমি কোনো পক্ষকেই সরেজমিনে কোনো হামলা বা মারধর করতে দেখিনি। হামলা ও মারধরের বিষয়টি পুরোপুরি মিথ্যা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেজাউল করিম রেজা বলেন, উভয় পক্ষের অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।