সাভারের আশুলিয়া এলাকা থেকে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক রেহানা পারভীন (৩৭) নামের এক গৃহবধূর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে আশুলিয়ার চাকলগ্রামে নিহত রেহানার ননদের বাড়ির উঠান থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ।
জানা গেছে, নিহত রেহানা পারভীন ঢাকার নবাবগঞ্জ থানার পাতিলঝাঁপ গ্রামের মো: লেহাজ উদ্দিনের মেয়ে। তিনি উচ্চ শিক্ষার জন্য প্রায় ১৬ বছর আগে অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলেন। সেখানে বিয়ে করেন মো: আওলাদ হোসেনকে। গ্রহণ করেন অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্ব।
৩ মেয়ে ও ১ ছেলের জননী রেহানা পারভীন। বড় মেয়ে আহাদ নূরকে নিয়ে গত ৩ মাস আগে দেশে ফেরার পর নিখোঁজ হন তিনি। নিখোঁজের পর রেহানার মা আইরিন আক্তার ঢাকার নবাবগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরপর এ ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত হয় ঢাকার অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশন এবং তাদের অনুরোধে সারা দেন আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোল।
সংস্থাটির দেওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে নিখোঁজ রেহানার অর্ধগলিত মরদেহের সন্ধান পান পুলিশ। পরে এ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে রেহানার ননদ পাপিয়া আক্তার ও তার সহযোগী আমজাদ হোসেনকে আটক করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই পাপীয়া আক্তারের বাড়ির উঠান থেকে উদ্ধার করা হয় মাটি চাপা দেওয়া রেহানার অর্ধগলিত মরদেহ।
নিহত রেহানার পরিবারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, গত ২৯ জুন (শনিবার) অস্ট্রেলিয়া থেকে দেশে আসেন রেহানা। পরদিন ৩০ জুন বাবার বাড়ি থেকে স্বামীর বাড়িতে যান তিনি। সেখানে কয়েকদিন থাকার পর গত ৩ জুলাই রেহানা তার বাবার বাড়িতে ফোন করে জানায় তাকে মারধর করা হয়েছে। তারপর থেকেই নিখোঁজ হন রেহানা পারভীন।
এ ঘটনায় ৩ জুলাই নবাবগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়রি (জিডি) ও ৮ সেপ্টেম্বর ৪ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করেন নিহত রেহেনার পরিবার। মামলায় আসামি করা হয় স্বামী মো: আওলাদ হোসেন, তার চাচা মো: আমজাদ হোসেন এবং ননদ পাপিয়া আক্তারকে। এছাড়া মাকসুদা নামে আরো ১ জনকে আসামি করা হয়েছে।
নবাবগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নূর মোহাম্মদ খান জানিয়েছেন, পারিবারিক বিরোধের কারনে হয়তো রেহানা পারভীনকে হত্যা করা হয় এবং পরে মাটিতে পুঁতে রাখা হতে পারে। নিহতের মরদেহের ময়নাতদন্তের জন্য মিটফোর্ড হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হবে। এছাড়া এ ঘটনায় জড়িত ২ ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।
ঢাকা জেলা দোহার সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো: আশরাফুল আলম জানিয়েছেন, এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করবেন ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো: আহমেদ মুঈদ। সেখানেই বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হবে।