১৯৭১ সালের যুদ্ধের পরে এবারই প্রথম ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সারা দেশে যুদ্ধকালীন প্রস্তুতি প্রস্তুতির অংশ হিসেবে একযোগে ২৭টি রাজ্য ও আটটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বেসামরিক মহড়ার নির্দেশ দিয়েছে।
আগামী বুধবার (৭ মে) থেকে শুরু হচ্ছে এই মহড়া, যাতে অংশ নেবেন সাধারণ মানুষ, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, এনসিসি ক্যাডেট, স্থানীয় প্রশাসন ও সুরক্ষা কর্মীরা। মহড়ার অংশ হিসেবে থাকবে ব্ল্যাকআউট অনুশীলন, সতর্কতামূলক সাইরেন, বাঙ্কার প্রস্তুতি ও আশ্রয়কেন্দ্র চিহ্নিতকরণ।
এই নির্দেশ অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গের ২৩টি জেলাসহ সারা দেশে মোট ২৫৯টি স্থানে মহড়া চালানো হবে। যুদ্ধের সময়ে বেসামরিক নাগরিকেরা কীভাবে নিজেদের রক্ষা করবেন, সেই বাস্তব অভিজ্ঞতা দিতে এবার এত বড় পরিসরে অনুশীলনের আয়োজন।
ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, যেকোনো হামলা বা বিপদের সময় নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে দ্রুত যাওয়ার অনুশীলন করানো হবে। বিমান হামলার সময় কীভাবে আলো নিভিয়ে ‘ক্র্যাশ ব্ল্যাকআউট’ করতে হবে, তাও দেখানো হবে।
পাঞ্জাবের ফিরোজপুরে এরই মধ্যে এমন একটি অনুশীলন হয়েছে। রোববার রাতে আধা ঘণ্টার জন্য ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় সব আলো নিভিয়ে দেওয়া হয়। স্থানীয়দের আগেভাগেই জানানো হয়, যেন কেউ উজ্জ্বল আলো বা দূর থেকে দৃশ্যমান কিছু ব্যবহার না করেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অনুশীলনের মধ্য দিয়ে যুদ্ধকালীন প্রস্তুতির পাশাপাশি মানসিক প্রস্তুতিও তৈরি হচ্ছে। কারণ, যুদ্ধ এখন আর সীমান্তে সীমাবদ্ধ নয়—সাইবার হামলা, মনস্তাত্ত্বিক আঘাত ও অবকাঠামো ধ্বংস করাও আধুনিক যুদ্ধের অংশ।
ভারত সরকার অবশ্য বলছে, এখনই কোনো যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। এটি নিছক অনুশীলন মাত্র। তবে প্রস্তুত থাকাটা জরুরি। কারণ, সময়ের আগেই সচেতন না হলে বড় বিপদের আশঙ্কা থেকে যায়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘আজকের দিনে যুদ্ধ মানে শুধু গোলাগুলি নয়। নাগরিক পরিকাঠামোকে অচল করেও যুদ্ধ জেতা যায়। তাই মানুষকে আগেভাগে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।