আকাশে পাখা মেলতেই পরিবারটি আনন্দে ঝলমল-চোখেমুখে ভরপুর উচ্ছ্বাস। লন্ডনের উদ্দেশে যাত্রা শুরুর আগেই তুলেছিলেন একটি সেলফি। কারও কল্পনাতেই ছিল না, সেটাই হয়ে থাকবে তাঁদের জীবনের শেষ ছবি।
ভারতের আহমেদাবাদে বিধ্বস্ত হওয়া উড়োজাহাজে ছিলেন রাজস্থানের চিকিৎসক দম্পতি প্রতীক জোশি ও কোমি বিয়াস এবং তাঁদের তিন শিশু সন্তান, মেয়ে মিরায়া, যমজ ছেলে নকুল ও প্রদ্যুত। সবাই নিহত হয়েছেন মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায়।
চিকিৎসক কোমি বিয়াস কর্মরত ছিলেন উদয়পুরের একটি হাসপাতালে। সম্প্রতি লন্ডনে থাকা স্বামীর কাছে স্থায়ীভাবে যেতে চাকরি ছেড়ে দেন তিনি। স্বামী প্রতীক পেশায় চিকিৎসক, কর্মস্থল ছিল যুক্তরাজ্যে। পরিবারের সবাইকে নিয়ে তিনি দেশে ফিরে আসেন। এরপরই শুরু হয় লন্ডনের পথে যাত্রা—যে যাত্রার সেলফি হয়ে থাকল শেষ স্মৃতি।
ছবিতে কোমি-প্রতীক পাশাপাশি, মুখে প্রশান্ত হাসি। সামনে বসে আছে তাঁদের মেয়েটি মিরায়া, বয়স মাত্র আট। সে প্রাণ খুলে হাসছে। পাশে বসা দুই যমজ ছেলে, নকুল ও প্রদ্যুত—ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে মৃদু হাসির চেষ্টা। এক নিস্পাপ মুহূর্ত, যে মুহূর্ত আজ শোকে ভারী।
প্রতীকের এক স্বজন নয়ন জানান, ‘প্রতীক মাত্র দুই দিন আগে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে আসেন। বৃহস্পতিবারই ছিল লন্ডনের ফ্লাইট। পরিবারের অনেকে এসে বিদায় জানায়।’ কোমির ভাই প্রবুদ্ধ বলেন, ‘দশ বছর আগে প্রতীকের সঙ্গে কোমির বিয়ে হয়।’ জানা গেছে, প্রতীকের বাবা একজন খ্যাতনামা রেডিওলজিস্ট এবং কোমির বাবা ছিলেন পরিকল্পনা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা।
বিমানটি ছিল বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার, আরোহী ২৪২ জন। আহমেদাবাদ থেকে উড্ডয়নের ৩২ সেকেন্ড পরই সেটি হঠাৎ নিচে নামতে শুরু করে। এরপর বিকট বিস্ফোরণ। দুর্ঘটনার সময় ছিল দুপুর ১টা ৩৮ মিনিট। ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, বিমানটি উড্ডয়নের সময়ই ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছিল।
সাবেক পাইলট সৌরভ ভাটনাগার এনডিটিভিকে বলেন, ‘চাকার গিয়ার ওঠানোর আগেই বিমান নিচে নামতে শুরু করে। এটি ইঞ্জিনে শক্তি কমে যাওয়ার লক্ষণ।’