নওগাঁর মান্দায় বাস ও অটোরিকশা শ্রমিকদের সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের সময় দুটি বাস ও ১৫টি অটোরিকশা ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় যানবাহন চলাচল না করায় দূর্ভোগে পরেছেন সাধারণ যাত্রীরা। শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) সারাদিন যাত্রীদের দুর্ভেোগ দেখা গেছে।
নতুন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ফেরিঘাট এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মান্দা থানা পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, প্রথমে অটোরিকশা শ্রমিকেরা সাবাইহাট বাজার এলাকায় দুটি বাস ভাঙচুর করেন। পরে মোটরশ্রমিক ইউনিয়নের শ্রমিকেরা সংঘবদ্ধ হয়ে ফেরিঘাট এলাকায় জড়ো হয়ে অটোরিকশা শ্রমিকদের ওপর হামলা ও অটোরিকশা ভাঙচুর করেন। বিকেল ৩টার দিকে ফেরিঘাট সেতুর মুখে ও ঢাকা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় রাস্তার ওপর আরা-আড়ি ভাবে বাস রেখে রাস্তায় অবরোধ সৃষ্টি করেন মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের লোকজন।
তারা আরও জানান, উপজেলার সাবাইহাট ও ফেরিঘাট এলাকায় দুপুর ২টা থেকে ৩টার মধ্যে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর থেকে নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়কে বাস ও তিন চাকার যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে ফেরিঘাট এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
নওগাঁ জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মতিউজ্জামান মতি বলেন, সরকারি আইন অনুযায়ী মহাসড়কে তিন-চাকার যান চলাচল নিষিদ্ধ। প্রশাসন ও মোটরশ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে বারবার নিষেধ করা সত্ত্বেও অটোরিকশা চালকেরা নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়কে জোর করে গাড়ি চালিয়ে আসছিল। তিনি আরও বলেন, এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। আজকে বেলা দুইটার দিকে সাবাইহাট এলাকায় সিএনজি চালক ও মালিকেরা সংঘবদ্ধ হয়ে দুটি বাস ভাঙচুর করে। এ সময় বাস দুটির চালক ও তার সহকারীকে মারধর করা হয়। পরে বাসশ্রমিকেরা এ ঘটনার প্রতিবাদ জানানোর জন্য মান্দার ফেরিঘাট এলাকায় রাস্তার ওপর আড়াআড়িভাবে বাস রেখে যান চলাচল বন্ধ করে দেন।
এ বিষয়ে সাবাইহাট সিএনজি-মালিক শ্রমিক সমিতির সভাপতি শফিকুল ইসলাম জানান, নওগাঁ বাস মালিক সমিতি ও মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের লোকজন মোহাম্মদপুর সাইনবোর্ড এলাকায় অবৈধভাবে নতুন চেকপোস্ট বসিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচলে বাঁধা সৃষ্টি করে। এ নিয়ে অটোরিকশার মালিক ও শ্রমিকেরা প্রতিবাদ করলে গত ২৯ আগস্ট মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের লোকজন তাদেরকে মারধর করে।
তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, আজকে নামাজের পর ফেরিঘাট থেকে রাজশাহীতে যাওয়ার সময় নতুন চেকপোষ্টে একটি অটোরিকশার থামিয়ে এর চালককে মারধর করে মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের লোকজন। পরে উপজেলার ফেরিঘাট এলাকায় বাসশ্রমিকেরা আবারও সিএনজি মালিক ও চালকের ওপর হামলা চালায়। এ
সময় ১৫-১৬টি অটোরিকশা ভাঙচুর করা হয়। হামলায় অন্তত ১৫ জন অটোরিকশা শ্রমিক আহত হয়েছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ মোজাম্মেল হক কাজী বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ চলছে। পুনরায় সংঘর্ষ এড়াতে ফেরিঘাট এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। যান চলাচল স্বাভাবিক করতে এবং উভয়পক্ষের মধ্যে সমঝোতার চেষ্টা চলছে। সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি।