রাজধানীর গুলশানে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসীর বাসায় গিয়ে ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক’ পরিচয়ে চাঁদা দাবির ঘটনায় গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের বহিষ্কৃত নেতা জানে আলম অপুকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। এর আগে তাকে সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়।
রাজধানীর ওয়ারী এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ। শুক্রবার (১ আগস্ট) গণমাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।
অন্যদিকে, সংগঠনটির দফতর সম্পাদক মাহফুজুর রহমান দুটি পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে জানান, সংগঠনের নাম ব্যবহার করে চাঁদাবাজির ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এতে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপু ও কেন্দ্রীয় সদস্য আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমানের নাম উল্লেখ করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, দলের ভাবমূর্তি ও শৃঙ্খলার পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত এবং চাঁদাবাজির মতো গুরুতর অপরাধে জড়িত থাকার কারণে আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার ও সদস্য সচিব জাহিদ আহসানের নির্দেশে অপু ও রাজ্জাককে সংগঠনের সকল পর্যায় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হলো। পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানানো হয়।
বহিষ্কারের পর পারই নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন জানে আলম অপু। পোস্টে তিনি দাবি করেন, “আমি গ্রেফতার হইনি, কোথাও চাঁদাবাজিও করিনি। গুলশানের ঘটনায় আমি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত নই।”
মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ১৭ জুলাই জানে আলম অপু ও আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ বাদীর গুলশান-২ এর বাসায় গিয়ে ‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ে ৫০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার দাবি করেন। বাদী টাকা না দিলে তাকে “আওয়ামী লীগের দোসর” বলে গ্রেফতারের হুমকি দেওয়া হয়।
গ্রেফতারের ভয়ে তিনি তাদের প্রথম দফায় ১০ লাখ টাকা দেন। এরপর ১৯ জুলাই ফের বাকি ৪০ লাখ টাকার জন্য তাকে চাপ দেয়া হয়। পরে ২৬ জুলাই চাঁদা নিতে গেলে গুলশান থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে চাঁদাবাজির সময় হাতেনাতে পাঁচজনকে আটক করে। এসময় কৌশলে অপু পালিয়ে যান।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান (রিয়াদ), ইব্রাহীম হোসেন, মো. সাকাদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব ও মো. আমিনুল ইসলাম। এদের মধ্যে চাঁদাবাজির নেতৃত্ব দিয়েছেন রিয়াদ বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে চারজনকে আদালত ৭ দিনের রিমান্ডে দিয়েছেন।