বগুড়ার তিন উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে লীটন-সজল ও সিটন বিজয়ী হয়েছেন। ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপেই ৩ উপজেলার নির্বাচনে জাল ভোট প্রদান, দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে প্রিজাইডিং অফিসারসহ তিনজন ভোটগ্রহন কর্মকর্তাকে অব্যাহতি, প্রিজাইডিং অফিসার ও প্রার্থীর এজেন্টকে আটকের মধ্য দিয়ে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।
সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ শেষে প্রতি কেন্দ্রে ভোট গণনা শুরু হয়। শেষে সংশ্লিষ্ট স্ব-স্ব নির্বাচন অফিসার নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণা করেন।
বগুড়ার তিন উপজেলায় ঘোষিত ফলাফলে বগুড়া-১ আসনের এমপি’র ভাই উপজেলা চেয়ারম্যান পদে এ্যাড মিনহাদুজ্জামান লীটন (সোনাতলা)পুনরায় উপজেলা চেয়ারম্যান ও ছেলে শিক্ষাবিদ সাখাওয়াত হোসেন সজল (সারিয়াকান্দি) এবং গাবতলী উপজেলায় কৃষিবিদ অরুনকান্তি রায় সিটন চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন।
নির্বাচন অফিস থেকে প্রাপ্ত ফলাফল থেকে জানা যায়, বগুড়া গাবতলী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে অরুণ কান্তি রায় সিটন জয়ী হয়েছেন। তিনি ঘোড়া প্রতীকে ৪১ হাজার ৬০৯ ভোট পেয়েছেন।
তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান চেয়ারম্যান রফি নেওয়াজ খান রবিন আনারস প্রতীকে ৩৯ হাজার ৭৫২ ভোট পেয়েছেন। অন্য প্রার্থীদের মধ্যে আতাউর রহমান হেলিকপ্টার প্রতীকে ২ হাজার ৩০৬ ভোট এবং সাহানুর রহমান সাকিল মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ৩ হাজার ২৪০ ভোট।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন দিলু (তালা) নির্বাচিত হয়েছেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বগুড়া মুজিবুর রহমান মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি শামিমা আকতার সুমি বিজয়ী হয়েছেন।
নির্বাচন কর্মকর্তা রুহুল আমিন জানান, গাবতলীতে মোট ৯৮টি কেন্দ্রে ৮৬ হাজার ৯০৭ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। ভোটের শতকরা হার ৩২ দশমিক ৪০ শতাংশ।
সোনাতলায় পুনরায় উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন মিনহাদুজ্জামান লীটন। আনারস প্রতীকে তার প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ২০ হাজার ৮৩৭টি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাকির হোসেন মোটরসাইকেল প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ৭ হাজার ২৪৫টি।
সোনাতলা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারি প্রিজাইডিং কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বুধবার (৮ মে) রাত ৮টার দিকে ফলাফল ঘোষণা করেন। নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে যুবলীগ নেতা ফিদা হাসান টিটু এর আগে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেত্রী ওয়াছিয়া আকতার লুনা নির্বাচিত হয়েছেন। ঘোষিত ফলাফলে দেখা গেছে, মোট ১ লাখ ৬৬ হাজার ১৬১ ভোটারের মধ্যে মাত্র ২৮ হাজার ৪২৭জন ভোট দিয়েছেন। ভোট প্রদানের হার ১৭ দশমিক ১১।
সারিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন সাখাওয়াত হোসেন সজল। ৭১ টি কেন্দ্রের মধ্যে তিনি পেয়েছেন ৩৭২৪৮ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান চেয়ারম্যান রেজাউল করিম মন্টু পেয়েছেন ৬১৫৩ ভোট।
নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান শিক্ষাবিদ সাখাওয়াত হোসেন সজল বগুড়া-১(সারিয়াকান্দি) আসনের প্রয়াত এমপি আব্দুল মান্নান ও বর্তমান সংসদ সদস্য সাহাদারা মান্নানের ছেলে। এ উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে লিখন মিয়া টিউবওয়েল প্রতীক নিয়ে জয়ী হয়েছেন।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন কুলসুম পারভীন শাপলা। তিনি প্রজাপতি প্রীক নিয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
উপজেলা নির্বাচন অফিসার সোহাগ চৌধুরী জানান, ১২ টি ইউনিয়ন এবং ১ টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত এ উপজেলার মোট ভোটার ১ লাখ ৯৮ হাজার জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৯৬ হাজার ১৪২ জন এবং নারী ভোটার ৯৮ হাজার ১৫৬ জন।প্রাপ্ত ভোটের শতকরা হার ২৬।
নির্বাচন চলাকালীন সময়ে তিন উপজেলায় ২২২টি কেন্দ্রে ও ১ হাজার ৩’শ বুথে প্রত্যক্ষ ব্যালটের মাধ্যমে ভোটগ্রহন হয়। প্রতিটি উপজেলায় জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট, প্রতিটি ইউনিয়নে নির্বাহি ম্যাজিষ্ট্রেট, কেন্দ্রগুলোতে পুলিশ সদস্য মোতায়েনসহ র্যাব, পুলিশ, বিজিবি, স্ট্রািইকিং ফোর্স দায়িত্ব পালন করেছেন।