বগুড়ার শাজাহানপুরে স্ত্রী ও শিশু পুত্রকে জবাই করে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত স্বামী মো: আজিজুল হককে (২৪) আটক করে পুলিশে হস্তান্তর করেছে হোটেল কর্তৃপক্ষ। শনিবার (০১ জুন) দিবাগত রাতের যে-কোন এক সময় শাজাহানপুর উপজেলার বনানী এলাকার শুভেচ্ছা আবাসিক হোটেলে এই নির্মম হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। দু‘জনকে নৃশংশভাবে জবাই করার পর শিশুপুত্র রাফির মাথা কেটে করতোয়া নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছে।
আটকৃত আজিজুল হক বগুড়ার ধুনট উপজেলার হেউটনগর গ্রামের কৃষক মো: হামিদুর রহমানের ছেলে এবং একজন সেনা সদস্য বলে জানা গেছে।
বগুড়ার শাজাহানপুরে স্ত্রী ও শিশু সন্তানকে জবাই করে হত্যার বিষয়ে হোটেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, স্ত্রী আশা মনি (২০) ও শিশুপুত্র মো: আব্দুল্লাহ আল রাফিকে (০১) নিয়ে ৩ দিন হোটেলে থাকবেন এমন কথা জানিয়ে শনিবার সন্ধ্যার দিকে বনানীস্থ শুভেচ্ছা আবাসিক হোটেলের ৩০১ নম্বর কক্ষে ওঠেন আজিজুল হক।
রবিবার (০২ জুন) সকাল ৯টার দিকে হোটেলে ফিরে ম্যানেজারকে বিল পরিশোধ করে সেখান থেকে সটকে পড়ার চেষ্টা করেন আজিজুল। কিন্তু তার সঙ্গে স্ত্রী-সন্তান না থাকায় হোটেল কর্তৃপক্ষের সন্দেহ হলে আজিজুলকে আটক করে পুলিশকে খবর দেয় হোটেল কর্তৃপক্ষ। এরপর থেকেই স্ত্রী-সন্তানকে হত্যার বিষয়টি চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।
নিহত আশামনির বাবা বগুড়া শহরের নারুলী পূর্বপাড়া এলাকার বাসিন্দা মো: আশাদুল জানান, বৃহস্পতিবার (৩০ মে) মেয়ের জামাই শশুর বাড়িতে বেড়াতে যায়। সেখান থেকে স্ত্রী-সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে শনিবার বিকালে নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয় আজিজুল। এরপর রাত ১০টার সময় আজিজুল তার শ্বশুরকে ফোন করে জানায়, ‘শরীর খারাপ হওয়ায় আশামনিকে বাড়িতে পঠিয়ে দিয়ে সে ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলো।’
তখন তিনি আজিজুলের বাসায় ফোন করে জানতে পারেন তার মেয়ে আশামনি বাড়িতে যায়নি। সারারাত চলে খোঁজাখুঁজি। রবিবার সকাল ১১টার দিকে লোকমুখে জানতে পারেন মেয়ে আশামনি ও নাতি শিশু রাফিকে বনানীস্থ একটি আবাসিক হোটেলে জবাই করে খুন করা হয়েছে।
বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: শরাফত ইসলাম, শাজাহানপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মা: শহিদুল ইসলামসহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।