ঝালকাঠিতে সরকারি হরচন্দ্র বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি শ্রেণিকক্ষ থেকে আফিয়া জাহান (১৫) নামে এক ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার (০১ জুলাই) সকালে স্কুলটির শ্রেণিকক্ষে ওই ছাত্রী মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে পুলিশ এসে তার মরদেহ উদ্ধার করেন।
এদিকে প্রাথমিক তদন্তে ওই ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে বলে ধারণা করছে পুলিশ। তবে নিহত ছাত্রীর পরিবার ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক এবং কর্মচারীদের দায়িত্বহীনতাকে দায়ী করে বিচার দাবি করেছেন।
নিহত আফিয়া জাহান সরকারি হরচন্দ্র বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রভাতী শাখার ৯ম শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন। সে ঝালকাঠি জেলা শহরের সুগন্ধা পৌর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক এসএম মো: ওবায়দুল্লাহ আমিনের মেয়ে।
জানা গেছে, প্রতিদিনের মতো সোমবার সকাল ৭টার সময় আফিয়া স্কুলে আসে। পরে ১০টার দিকে টিফিনের সময় শ্রেণিকক্ষের পাশেই স্কুলের একটি ৪ তলা ভবনের দিকে যায় একা একা। পরে সহপাঠীরা আফিয়াকে খুঁজতে গিয়ে শ্রেণিকক্ষের ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায় তাকে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। পরে আফিয়াকে জেলা সদর হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আফিয়ার সহপাঠীরা জানান, একটি ছেলের সাথে আফিয়ার প্রেমের সম্পর্ক চলছিলো। কিন্তু বেশ কিছুদিন ধরে ওই ছেলেটি তাকে এড়িয়ে যাচ্ছিলো। এতে অভিমান করে আফিয়া আত্মহত্যা করতে পারে।
তবে আফিয়ার মা কুরছিয়া খানম জানান, আমরা স্বামী-স্ত্রী দুজনেই চাকরি করি। দিনের বেলায় আমাদের বাসা খালি থাকে। আফিয়া বাসায়ও আত্মহত্যা করতে পারতো। কিন্তু কী কারণে সে স্কুলে এমন ঘটনা ঘটলো, তা তদন্ত করে দেখা প্রয়োজন। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক এবং কর্মচারীদের দায়িত্বহীনতার জন্য বিচার দাবি করেন তিনি।
ঝালকাঠিতে বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ থেকে স্কুলছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের বিষয়ে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো: মহিতুল ইসলাম জানান, নিহতের মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হবে। এ ঘটনায় সদর থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে স্কুল ও সদর হাসপাতালে ছুটে যান জেলা প্রশাসক ফারাহ গুল নিঝুম। তিনি জানান, ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক। তবে কী কারণে এ ঘটনা ঘটেছে তা তদন্তের জন্য ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।