চাঁদাবাজি ও প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তার মডেল মেঘনা আলম ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে দাবি করেছেন, তাঁর পরিচয় ছিল কেবল সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা ইউসুফ ঈসা আলদুহাইলানের সঙ্গে। ব্যবসায়ী দেওয়ান সমিরকে তিনি চেনেন না, এমনকি তারা বন্ধুও নন।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) আদালতে হাজির হয়ে বিচারকের অনুমতিক্রমে নিজ অবস্থান ব্যাখ্যা করেন মেঘনা আলম। এ সময় তিনি বলেন, সৌদি রাষ্ট্রদূত তাঁকে ব্যক্তিগতভাবে ফোন করেছিলেন এবং তাঁদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল, এমনকি বিয়েও হয় বলে আদালতে দাবি করেন তিনি।
এর আগে, ১৫ এপ্রিল ধানমন্ডি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আবদুল আলীম বাদী হয়ে মেঘনা, দেওয়ান সমিরসহ অজ্ঞাতনামা আরও দুই-তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। অভিযোগে বলা হয়, গত ২৯ মার্চ ধানমন্ডির একটি রেস্তোরাঁয় এক গোপন বৈঠকে অংশ নিয়ে একটি কূটনৈতিক ব্যক্তির (যার নাম এজাহারে উল্লেখ নেই) কাছে ৫ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ৬০ কোটি টাকা) দাবি করা হয়। পরিকল্পনাটি ছিল প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আদায়ের উদ্দেশ্যে, যা আন্তরাষ্ট্রীয় সম্পর্কের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে।
বিষয়টি নিয়ে মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, মেঘনা আদালতে স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, দেওয়ান সমিরকে তিনি চিনতেন না এবং এই মামলার ঘটনার সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
অন্যদিকে, ব্যবসায়ী দেওয়ান সমিরও দাবি করেন, তাঁকে মেঘনা আলমের ‘বয়ফ্রেন্ড’ হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে, যা ভিত্তিহীন। তাঁর সঙ্গে মেঘনার কোনো সম্পর্ক নেই এবং তিনি মামলার ঘটনার কিছুই জানেন না।
এ মামলায় আদালত মডেল মেঘনাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেন। পাশাপাশি দেওয়ান সমিরকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেওয়া হয়।
এর আগে ১১ এপ্রিল ভাটারা থানায় দায়ের করা আরেকটি চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তার হন দেওয়ান সমির। সেই মামলায়ও তাঁকে রিমান্ডে নেয় ডিবি পুলিশ।
অন্যদিকে, গত ৯ এপ্রিল রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা থেকে মেঘনা আলমকে আটক করে ডিএমপির গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। পরদিন ১০ এপ্রিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে তাঁকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩০ দিনের জন্য আটক রাখার আদেশ দেন আদালত।
মেঘনার আটকাদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে তাঁর বাবা বদরুল আলম হাইকোর্টে রিট করেন। গত রোববার রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল জারি করেন এবং আটকাদেশের আইনগত বৈধতা নিয়ে ব্যাখ্যা চেয়েছেন।