ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাত ও জলোচ্ছ্বাসে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে দ্বীপ উপজেলা হাতিয়া। এতে নিঝুম দ্বীপসহ হাতিয়া উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে নিঝুম দ্বীপের বহু হরিণ ভেসে গেছে এবং অনেক হরিণের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন নিঝুম দ্বীপের চেয়ারম্যান। ভারী বৃষ্টি ও তীব্র বাতাসের কারণে এখনো আতঙ্ক বিরাজ করছে ওই দ্বীপের পানিবন্দী অসহায় মানুষের মাঝে।
নিঝুম দ্বীপের চেয়ারম্যান মো: দিনাজ উদ্দিন বলেন, সোমবার (২৭ মে) সকাল থেকে পানি কমতে শুরু করলেও সন্ধ্যার দিকে পুনরায় ঘুর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে পুরো এলাকা আবার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এদিকে গত ৩ দিন ধরে হাতিয়ার সাথে বাইরের সব নৌ যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। তীব্র বাতাসের কারণে ৩ দিন ধরে হাতিয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহও বন্ধ আছে বলে জানান নির্বাহী প্রকৌশলী মো: মশিউর রহমান।
আরেকদিকে স্থানীয় এমপি মোহাম্মদ আলী মঙ্গলবার (২৮ মে) দুর্যোগ ও ত্রাণমন্ত্রী বরাবর ক্ষয়ক্ষতির যে প্রতিবেদন দিয়েছেন তাতে দেখা যায় নিঝুম দ্বীপে ৯ হাজার পরিবারের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ৩ হাজার ৫ শতাধিক কাঁচাঘর বিধ্বস্ত হয়েছে।
ঢাল চরের ৪ হাজার পরিবারের প্রায় ১০ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, চর ঘাসিয়ায় ২০ হাজার পরিবার, চানন্দি ইউনিয়নের ৪ হাজার পরিবারের প্রায় ১০ হাজার মানুষ ও ৫ শতাধিক কাঁচাঘর বিধ্বস্ত হয়েছে।
এছাড়া হরনী, নলচিরা, চানন্দি, জাহাজমারা, সুখচর, সোনাদিয়া, বুড়ির চর, চরকিং, চর ঈশ্বর, নলচিরা ইউনিয়নের সকল এলাকা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে এবং অনেক ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। অপরদিকে নিঝুম দ্বীপ ও চানন্দী ইউনিয়নে বেড়ীবাঁধ না থাকায় অস্বাভাবিক সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে এই ২ এলাকায় প্রায় ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
মোহাম্মদ আলী আরো উল্লেখ করেছেন, হাতিয়া উপজেলায় ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে প্রায় ১০০ কি. মি. কাঁচা পাকা রাস্তা বিধ্বস্ত হয়েছে এবং হাজার হাজার গবাদি পশু ও বহু পুকুরের মাছ পানিতে ভেসে গেছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শুভাশীষ চাকমা জানিয়েছেন, রেমালের আঘাতে হাতিয়ায় প্রায় ৫২ হাজার পরিবার ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শুভাগত বিশ্বাস জানিয়েছেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের মাঝে সরকারি ত্রান সামগ্রী বিতরণ করা যাচ্ছে না।